সরকারি ওয়েবসাইটে ‘বহাল’ ময়মনসিংহের জনপ্রতিনিধিরা

সরকারি তথ্য বাতায়নে ময়মনসিংহের ১১টি আসনের সংসদ সদস্য ছাড়াও অপসারিত সব জনপ্রতিনিধির নাম বহাল রয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা ২০ মিনিটের চিত্র
ছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে গত ৬ আগস্ট। অথচ সরকারি তথ্য বাতায়ন (ওয়েবসাইট) দেখলে মনে হবে, ময়মনসিংহের ১১টি আসনের সংসদ সদস্যরা এখনো স্বপদে বহাল আছেন। শুধু সংসদ সদস্যরা নন, স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার মেয়রদের নামও রয়েছে এ তালিকায়। অথচ স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদেরও অপসারিত করা হয়েছে। বিলুপ্ত সংসদ ও অপসারিত স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের ছবিসংবলিত তালিকা বহাল আছে জেলা প্রশাসনের তথ্য বাতায়নের জনপ্রতিনিধি ক্যাটাগরিতে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের তথ্য বাতায়ন ঘেঁটে দেখা যায়, সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকারের অপসারিত জনপ্রতিনিধিদের নাম রয়েছে। তবে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যাঁরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের কোনো তথ্য নেই। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির ছবিসংবলিত তালিকা এখনো রয়েছে। অথচ সরকারি এ তথ্য বাতায়নটি সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ১২ সেপ্টেম্বর।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দেশ ছাড়ার পর ৬ আগস্ট বিকেলে সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর ধারা ১৩ (ক) প্রয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এর আগে ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হয়।

বিলুপ্ত সংসদের সংসদ সদস্য ও অপসারিত জনপ্রতিনিধিদের তালিকা সরকারি তথ্য বাতায়নে বহাল আছে—বিষয়টি জানতেন না বলে জানালেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুফিদুল আলম। তিনি আজ বেলা দেড়টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এটি পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহের অন্যতম সমন্বয়ক গোকুল সূত্রধর মানিক বলেন, ‘বিষয়টি প্রশাসনের বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি। যদি এমনটি ঘটে থাকে, তাহলে খুবই দুঃখজনক। যাঁরা তথ্য বাতায়নটি নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করে না বলে মনে করি।’ তিনি আরও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এই তথ্যগুলো আপডেট করা হয়নি। প্রায় দেড় মাস সময় হলেও কেন তথ্যগুলো আপডেট করা হবে না, এর সঙ্গে যাঁদের অবহেলা রয়েছে, তাঁদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এই সমন্বয়ক।