বরিশাল নগরের বেলস পার্কে আট দিনব্যাপী ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা ২০২৪’ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে
বরিশাল নগরের বেলস পার্কে আট দিনব্যাপী ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা ২০২৪’ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে

পাঠক–ক্রেতার ভিড়ে জমে উঠেছে বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা

পাঠক ও ক্রেতাদের ভিড়ে জমে উঠতে শুরু করেছে বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা। স্টলগুলোতেও বাড়ছে বিক্রিবাট্টা। গত বুধবার আনুষ্ঠনিকভাবে মেলার উদ্বোধন হয়। তবে ওই দিন মেলায় তেমন ভিড় ছিল না। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতারা মেলায় আসতে শুরু করেছেন।

নগরের বেলস পার্কে আট দিনব্যাপী ‘বরিশাল বিভাগীয় বইমেলা ২০২৪’–এর আয়োজন করেছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বুধবার বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার। মেলায় ৭৭টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে; সব মিলিয়ে স্টল ৮০টি রয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিন, বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মঞ্জুর মোরশেদ আলম, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাসুদুর রহমান বিশ্বাস, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগম প্রমুখ।

আট দিনব্যাপী এই বইমেলা প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

গতকাল রাতে মেলাপ্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টলে ক্রেতারা পছন্দের বই কেনার জন্য ভিড় করেছেন। মেলাপ্রাঙ্গণে কথা হয় বরিশাল বিএম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শাহ সাজেদার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কয়েকটি বই কিনেছি। পছন্দের আরও কয়েকটি বই কিনব; বাছাই করে রেখেছি। প্রতিদিন এসে ঘুরে ঘুরে দেখে বই কেনার মজাই আলাদা। তাই এক দিনে সব বই কিনিনি।’

গতকাল মেলায় আসেন শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম, আকবার মুবিন, মো. সিফাত, তনুশ্রী ও নাইমা রহমান। তাঁরা সবাই উদ্বোধনী দিনেও মেলায় এসেছিলেন। নাঈম ইসলাম বলেন, ‘আমরা পছন্দের বই কেনার বাইরেও মেলায় বন্ধুদের গল্প-আড্ডা, আবৃত্তি—এসবের মধ্য দিয়ে একটি সৃজনশীল সময় কাটানোর সুযোগ এনে দিয়েছে এই মেলা। বই কিনেছি। ঘুরে ঘুরে দেখছি। পছন্দ হলে আরও কিনব।’

বইমেলা প্রাঙ্গণে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে

বই দেখা-কেনার মধ্যেও আবার চলছে ঘোরাঘুরি। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার মেলায় পরিচিতজনকে পেয়ে গল্পে-আড্ডায় মেতে উঠছেন। আবার কেউ কেউ ঘুরে ক্লান্ত হয়ে মাঠেই বসে জিরিয়ে নিচ্ছেন। পাশেই চলছে বিশাল মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মেলায় প্রথমা, সময়, অনন্যা, চৈতন্য, বিদ্যাপ্রকাশ, অক্ষর বুনন, গ্রন্থরাজ্য, মওলা ব্রাদার্স, আগামী, রাবেয়া বুকস, ঝিনুক, আফসার ব্রাদার্স, আলোঘর, জনতা প্রভৃতি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রদর্শনী স্টল।

প্রথমার স্টলে দায়িত্বে থাকা মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘মেলার দ্বিতীয় দিন ভিড় বেড়েছে। মোটামুটি ভালোই সাড়া পাওয়া পাচ্ছে। এখন ক্রেতারা পছন্দের বই বাছাই করছেন। বেচাবিক্রি মোটামুটি ভালো হচ্ছে। আশা করি সামনের বিক্রি আরও বাড়বে।’

আয়োজকেরা জানান, মেলাপ্রাঙ্গণে লেখক-পাঠক আড্ডা, কবিতার আসর, মিডিয়া কর্নার এবং মা ও খোকা-খুকির রাজ্য শীর্ষক চারটি পৃথক কর্নার রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত আলোচনা অনুষ্ঠান, সেমিনার ও প্রতিযোগিতার পৃথক আয়োজন তো থাকছেই। এরপর রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।