ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে পটুয়াখালী-গলাচিপা সড়কের সুহুরী জলকপাট এলাকার বেড়িবাঁধ ধসে গেছে। গত দুই দিন ওই সড়কে বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ দিকে বেড়িবাঁধের ধসে যাওয়া অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে এলাকার চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন চার গ্রামের অন্তত আড়াই হাজার বাসিন্দা।
গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ও গোলখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সুহুরী এলাকায় পুরোনো জলকপাটের অবস্থান। এর পাশে বেড়িবাঁধের ওপর সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, মালামাল পরিবহনে ট্রাকসহ ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল গত রোববার রাত আটটার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। এরপর উপকূল থেকে শুরু করে সারা দেশে বৃষ্টি শুরু হয়। রোববার রাতে জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধের ভেতর থেকে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়ে রাবনাবাদ নদের পানি লোকালয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। জোয়ারের প্রবল স্রোতে একপর্যায়ে বেড়িবাঁধ ধসে পড়ে। ভেঙে যায় সড়কের একাংশ। গতকাল সোমবার সকাল থেকে পটুয়াখালী-গলাচিপা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে।
এদিকে উঁচু জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বেড়িবাঁধ–সংলগ্ন তফালবাড়িয়া, ভাংগ্রা, আমখোলা ইউনিয়নের দক্ষিণ অংশ ও বাউরিয়ার একাংশ প্লাবিত হয়েছে।
আমখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবুল হোসেন মৃধা জানান, ভারী যানবাহন চলাচল করায় বাঁধ ও সড়ক ঝুঁকিতে ছিল। প্রবল স্রোতে সুহুরী জলকপাট এলাকার বেড়িবাঁধ ধসে গেছে। কয়েকটি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘরের পাশাপাশি ফসলি খেতও প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় শিক্ষক আউয়াল হোসেন জানান, এমনিতেই এই এলাকা নিচু। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার পর এখন তা দ্রুত নামছে না। এ কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান জানান, বিষয়টি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ে জানিয়েছেন। মাটি ফেলে সড়কটি দিয়ে যাতে হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারে, এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, জেলায় ১৪ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬ কিলোমিটার জলোচ্ছ্বাসে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমখোলার বেড়িবাঁধ জরুরিভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।