ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতকটিকে নিয়ে আলোচনা থামছেই না। জেলা প্রশাসক নবজাতকের চিকিৎসার ব্যাপারে নিজেই খোঁজখবর রাখছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই শিশুটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে নবজাতককে নিজেদের কাছে রেখেই বড় করতে চান বৃদ্ধ দাদা-দাদি।
আজ রোববার সকালে ত্রিশালের রায়মনি গ্রামে গিয়ে কথা হয় দাদা মোস্তাফিজুর রহমান ও দাদি সুফিয়া বেগমের সঙ্গে। তখন তাঁরা নবজাতকটিকে নিজেদের কাছে রেখে লালন-পালন করার কথা জানান। তাঁরা প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও এক নাতির মৃত্যুর পর থেকে তাঁরা শোকে কাতর। এর মধ্যে জানতে পেরেছেন, সড়কে জন্ম নেওয়া নবজাতকটিকে অনেকেই দায়িত্ব নিয়ে লালন-পালন করতে চান।
মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। ছয় বছর ধরে কাজ করতে পারি না। আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। এখন মাসে ৪৫০ টাকা সরকারি ভাতা পাই। তবে নিজের কাছেই রেখে মা-বাবা হারানো নাতিকে আমরা লালন-পালন করতে চাই।’
গতকাল শনিবার বিকেলে যে সময় নবজাতকটি জন্ম নেয়, ঠিক সেই সময় পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে তাকে রেখে চিরবিদায় নেন মা-বাবা আর বোন। ত্রিশালের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোর্ট ভবন এলাকায় সড়ক পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী ট্রাকের চাপায় মারা যান শিশুটির বাবা জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মা রত্না বেগম (৩২) ও ছয় বছর বয়সী বোন সানজিদা।
নবজাতকটি ময়মনসিংহ নগরের চরপাড়া এলাকার লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের মালিক মো. শাহ জাহানের বাড়ি রায়মনি গ্রামে। তিনি গতকাল নবজাতকটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। দুপুরে হাসপাতালের একটি কক্ষে নবজাতকটি কোলে নিয়ে বসেছিলেন শাহ জাহানের স্ত্রী লুৎফুন্নাহার বেগম। তখন শাহ জাহান প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতকটির ডান হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। তাকে অন্তত দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকতে হবে। তিনিই চিকিৎসার সব দায়িত্ব পালন করবেন বলে তিনি জানান।
লাবীব হাসপাতালের চিকিৎসক কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে আছে নবজাতকটি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতকটির হাত ভেঙে যাওয়ায় প্লাস্টার করা হয়েছে। তবে এখন সে বেশ ভালো আছে।