কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। উখিয়া-টেকনাফে ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা থাকায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁদের কারণে আশ্রয়শিবির ও আশপাশে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সরকার স্থানীয়দের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে চায়।
আজ রোববার দুপুরে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) নির্মাণাধীন ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে নবনির্মিত ১২টি ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন।
স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ প্রচেষ্টায় ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নতুন করে নির্মাণ করছে আইওএম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বশর মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব জাহাঙ্গীর আলম, আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আব্দুস সাত্তার, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, অতিরিক্ত সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, সিভিল সার্জন মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশের সর্বদক্ষিণের এ অংশে মৌলিক অবকাঠামো ও পরিষেবাগুলো আগে থেকেই জাতীয় গড়ের তুলনায় কম। এখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মধ্যে অনেকগুলো প্রায় দুই দশক আগে নির্মিত। সেগুলো বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ক্লিনিকগুলোর পুরোনো ভবন ভেঙে আইওএম নতুন দোতলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেছে। নবনির্মিত ভবনগুলো আগের চেয়ে আরও বড় এবং পরিবেশগতভাবে টেকসই। রয়েছে সৌরচালিত বিদ্যুৎব্যবস্থা, নিরাপদ পানি সরবরাহ ও উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সরকার জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি বৃদ্ধি করেছে এবং দেশব্যাপী করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের এ প্রচেষ্টায় আইওএমও অংশ নিয়েছে। উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁরা একসঙ্গে কাজ করছেন।
আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আবদুস সাত্তার বলেন, শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নানামুখী চাহিদা পূরণে তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংস্থাগুলোর মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারত্বের প্রয়োজন। মানবিক-উন্নয়ন সম্পর্কের ফলাফল যে দীর্ঘস্থায়ী হয়, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো বাংলাদেশ সরকার, বিশ্বব্যাংক ও আইওএম-এর যৌথ প্রচেষ্টা।