মুন্সিগঞ্জের চরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের হামলায় আহত প্রতিপক্ষের এক যুবককে হাসপাতালে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার সোলারচর এলাকায়
মুন্সিগঞ্জের চরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের হামলায় আহত প্রতিপক্ষের এক যুবককে হাসপাতালে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার সোলারচর এলাকায়

মুন্সিগঞ্জে আ.লীগের এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

আহত ব্যক্তিরা হলেন মো.শাকিল (১৯), মো. জুয়েল (২০), আয়নাল হক (২৮), লিপি বেগম (৩৮), জিসান (১৪), রিংকু (২৫), জহির (২৬), রোমান (২২), আরিফ হোসেন (৩০) ও আঞ্জু সরকার (৭২)। তাঁদের মধ্যে শাকিল, জুয়েল, আয়নাল, লিপি, জিসানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সুরুজ মিয়া ও তাঁর ভাতিজা জহির উদ্দিনদের সঙ্গে আলী হোসেন সরকার ও তাঁর ভাগনে ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান ভূঁইয়াদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জেরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সুরুজ-জহির উদ্দিন পক্ষের সোহেল, তানভীর হাসান, কবির হোসেন, রনিসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল সোলারচর ও বকুলতলা গ্রামে হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রতিপক্ষের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ও অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এতে হামলাকারীদের ছোড়া গুলিতে এবং আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে ১০-১২ জন আহত হন। তাৎক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতিতে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাঁদের সবার শরীরে ছররা গুলি বিদ্ধ ছিল। তবে যখম গুরুতর নয়। তবে শরীর থেকে গুলি বের করতে আহত ব্যক্তিদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

কয়েক দিন পরপরই সুরুজ, আহাদুলের লোকজন সোলারচর ও বকুলতলা গ্রামে হামলা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন গুলিবিদ্ধ মো.জহির। তিনি বলেন, ‘আজ সকালে হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে আমিসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছি। কিছুদিন পরপর মারধর, গুলি, দোকাপাট, বাড়িঘরে লুটপাট করছে তারা। আমরা এসব ঘটনা থেকে পরিত্রাণ চাই।’

সুরুজের ভাতিজা জহির উদ্দিন ও তাঁদের অর্থদাতা আহাদুলদের কারণে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আগে মাসে একবার হামলার ঘটনা ঘটত, এখন দু–চার দিন পরপর ঘটছে। আজ আমাদের পক্ষের পাঁচটি ঘর, চারটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। পিটিয়ে ও গুলি করে ১০-১৫ জনকে আহত করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুরুজ মিয়ার মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটি মামলার কাজে ঢাকার হাইকোর্টে আছি। এলাকায় কারা, কী কারণে ঝগড়া লেগেছে, তা আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান