টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ ও নিহত হওয়ার ঘটনায় মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলাটি করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী এস এম আলম হোসেন নামের এক ব্যক্তি।
মামলার বাদী এস এম আলম হোসেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাইটাল গ্রামের মৃত এস এম মোক্তার হোসেনের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার আলমি শুরার সাথি।
মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক শ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন সাদ অনুসারীদের প্রধান মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, তাঁর ছেলে ওসামা ইসলাম আনু, আবদুল্লাহ মনসুর, কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নূর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, আনোয়ার আবদুল্লাহ, শফিউল্লাহ প্রমুখ। আসামিরা সবাই সাদ অনুসারীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকানদার হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষ ও নিহত হওয়ার ঘটনায় জোবায়ের অনুসারীরা প্রথমে এজাহার দায়ের করেন। পরে সেটি যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল রাত ১০টার দিকে মামলা হিসেবে রুজু হয়। মামলায় সাদ অনুসারী ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অসংখ্যজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে তিন দিনের মূল ইজতেমা। এ উপলক্ষে মাঠ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইজতেমা মাঠে অবস্থান করছিলেন তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা। এর মধ্যেই আসামিরা বর্তমান সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে অনুমতি ব্যতীত ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে ৫ দিনের জোড় করতে চান। এ নিয়ে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন উসকানি ছড়াচ্ছিলেন। মামলার প্রধান আসামি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তাঁর স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে সারা দেশের সাদ অনুসারীদের ২০ থেকে ২৪ ডিসেম্বর টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মাঠেই জোড় পালনের ঘোষণা দেন। এ উপলক্ষে হাজার হাজার সাদ অনুসারী মুসল্লি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ইজতেমা মাঠের চারপাশে জড়ো হন। ওয়াসিফুল ইসলামের হুকুমে সেদিন (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাজার হাজার সাদ অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইজতেমা মাঠে ঘুমন্ত সাধারণ মুসল্লিদের (জোবায়েরপন্থী) ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
এজাহারে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাজার হাজার সাদ অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইজতেমা মাঠে ঘুমন্ত সাধারণ মুসল্লিদের (জোবায়েরপন্থী) ওপর অতর্কিত হামলা চালান।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ওই হামলায় প্রাণ হারান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত ওসমান গণির ছেলে আমিনুল ইসলাম (৬৫), ফরিদপুর সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মৃত শেখ সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) এবং বগুড়া সদর উপজেলার ধাওয়াপাড়া গ্রামের ওমর উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলাম।