মো. আবদুল আলী ব্যাপারী (৬৪) এখন পর্যন্ত তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রতিটি নির্বাচনে তিনি জামানত হারিয়েছেন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা চান না তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হোন। এরপরও নির্বাচন এলেই তিনি প্রার্থী হতে চান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ (দৌলতপুর, ঘিওর ও শিবালয়) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
আবদুল আলী ব্যাপারীর ভাষ্য, নির্বাচন এলে তিনি ঠিক থাকতে পারেন না। নির্বাচনের ফলাফল যা–ই হোক না কেন, অংশ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাই তাঁর শখ।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নাতিকে সঙ্গে নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবদুল আলী ব্যাপারী। সেখান থেকে বের হয়ে প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তখন ইট-বালুর সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করি। বিএনপির সরকারের সময় এমপির বাড়িতে কাজ শুরু করি। আমি তাঁকে বললাম, আপনার বাড়িতে টয়লেটের রাস্তা আছে, কিন্তু আমাদের বাড়ির রাস্তা পর্যন্ত নাই!’ তিনি বললেন, ‘কিছু একটা হইয়া আইসো, এইভাবে চিনি না। আমি হইলাম ক্ষুদ্র মানুষ। পরে বাড়ি আইসা নির্বাচন করার চিন্তা করলাম।’
বিগত নির্বাচনে জামানত হারানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে আবদুল আলী ব্যাপারী বলেন, ‘আমি তিনবার ইউপি নির্বাচন করেছি। এবার সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হয়েছি। আমার পরিবারের লোকজন, এমনকি স্ত্রীও আমারে ভোট না দিলে দুঃখ নাই। আমার কোনো দলবল নেই।’
আবদুল আলী ব্যাপারীর বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ইট-বালু সরবরাহের ব্যবসা করতেন। এখন গ্রামে অবসর জীবন যাপন করছেন। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই শিক্ষিত। পরিবারের সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে তিনি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচন করেন। প্রতিবারই তিনি জামানত হারিয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল আলী বলেন, ‘আমার স্ত্রী নির্বাচন করতে নিষেধ করলেও আমার মন চায়। নির্বাচন আইলে আমি ঠিক থাকতে পারি না। আমাদের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দাঁড়াইছি, তখন মনোনয়নপত্র এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রেখে আসি। আমার স্ত্রী জানার পর গলায় দা ধরে। এরপরও আমি নির্বাচন করেছি। যত দিন বাঁচি, নির্বাচন করেই যাব।’