বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল, ভাঙচুর ও একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। আজ সোমবার সকালে গাজীপুরের চান্দনার ভোগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা।
শ্রমিক সংগঠনের নেতা মো. আশফুজ্জামান বলেন, শ্রমিকেরা আন্দোলন করবেন শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু একটি পক্ষ শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে ভাঙচুর করাচ্ছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ভাষ্য, ন্যূনতম মূল বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
পুলিশ ও কারাখানার শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের চান্দনার ভোগড়া এলাকায় শ্রমিকেরা অবস্থান নেন। সেখানে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ১৫ থেকে ১৬টি যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক ভাঙচুর করেন। কলম্বিয়া গার্মেন্টস নামের একটি পোশাককারখানার সামনে থাকা একটি জিপে আগুন দেন তাঁরা। পরে পুলিশ এসে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এলে বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে থেমে থেমে গাড়ি চলতে শুরু করে।
ভাগাড় এলাকার একটি পোশাক তৈরি কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শ্রমিকেরা আন্দোলন করে বিভিন্ন কারখানায় হামলা–ভাঙচুর করেছেন। এতে মালিকেরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কাজ বন্ধ থাকায় বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গাজীপুর বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, শ্রমিকেরা সকাল থেকে বিক্ষোভ করেন। সড়কে বেশ কিছু যানবাহনও ভাঙচুর করেছেন। একটি জিপে অগ্নিসংযোগ করেছেন তাঁরা। গাড়িটি পুলিশের নাকি অন্য কোনো দপ্তরের, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী ও কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা ও মৌচাক এলাকায় শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে আসছেন। গত শুক্র ও শনিবার এ কর্মসূচি বন্ধ ছিল। আজ ষষ্ঠ দিনের মতো আবারও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সড়কে নেমেছেন। কয়েক দিনে এসব এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি চলাকালে কারখানায় ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও যানবাহন ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে।