যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূর শরীরে ফুটন্ত পানি ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার তালায় যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূর শরীরে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার আট দিন পরে তালা থানায় ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে মামলা হয়েছে। তবে আসামিরা ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছেন। ওই গৃহবধূ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম আশা মণ্ডল (২৪)। তিনি তালা মহিলা কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী। তাঁর বাবার বাড়ি উপজেলার ঘোনা গ্রামে। বিয়ে হয়েছে একই উপজেলার মাগুরা গ্রামে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বছর আগে আশা মণ্ডলের সঙ্গে বিপ্লব দাসের (৩০) বিয়ে হয়। বিয়েতে আশার বাবা নগদ অর্থ আর বিভিন্ন জিনিসপত্র মিলিয়ে তিন লাখ টাকার যৌতুক দেন। কয়েক দিন যেতে না যেতেই আবার পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বিপ্লব দাস। আর কোনো টাকা দিতে পারবেন না জানালে আশার সঙ্গে বিপ্লবের কথা–কাটাকাটি হয়। ১০ নভেম্বর সকালে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে বিপ্লব আশার শরীরে গরম পানি ছুড়ে মারেন। ঝলসে যায় শরীরের অর্ধেক অংশ। তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়।

ভুক্তভোগী আশা মণ্ডলের বাবা প্রদীপ কুমার মণ্ডল বাদী হয়ে জামাতা বিপ্লব দাস, বিপ্লবের বাবা প্রভাত দাস ও মা অনিতা দাসকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।

খবর পেয়ে আশার বাবা মেয়েকে আনতে গেলে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন জামাতা বিপ্লব। মেয়েকে জোর করে এনে তিনি পরের দিন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আশা রানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যৌতুকলোভীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করাটা ছিল জীবনের বড় ভুল।’ যৌতুকের জন্য তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শেখ ফয়সাল আহমেদ বলেন, আশার শরীরের ৪৫ শতাংশ ঝলসে গেছে। তবে বর্তমানে তাঁর অবস্থা ভালোর দিকে।

অভিযুক্ত বিপ্লব দাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী রেজাউল করিম বলেন, আশার পরিবার শুরুতে পুলিশকে ঘটনা জানায়নি। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা করে। শনিবার রাতে আশা মণ্ডলের বাবা প্রদীপ কুমার মণ্ডল বাদী হয়ে জামাতা বিপ্লব দাস, বিপ্লবের বাবা প্রভাত দাস ও মা অনিতা দাসকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। আসামিরা সবাই বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপন করেছেন।