কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত দিন থাকলেও আসামি অনুপস্থিতির কারণে সাক্ষ্য গ্রহণ করেননি আদালত। আগামী ২৯ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। এর আগে ৬ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য তারিখ ছিল। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক আগামী ধার্য তারিখে সব আসামিকে আদালতে উপস্থিত করতে জেল সুপার ও কারা মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু নাসের মো. ফারুক বলেন, জঙ্গি হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ছিল আজ। আদালতে আসামি ও মামলার বাদীসহ মোট ১৭ সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আসামি মো. সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল অন্য একটি মামলায় রাজশাহী কারাগারে থাকায় আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। মূলত আসামিদের কারণে মামলাটি দেরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ২৯ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন দিন ধার্য করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন নামাজ শুরুর আগমুহূর্তে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অদূরে আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে পুলিশের তল্লাশির সময় জঙ্গিরা গ্রেনেড হামলা করে। এ ছাড়া তাদের চাপাতির কোপে দুই পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম নিহত হন। এ সময় ১২ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে জঙ্গি আবির রহমান নিহত হন। উভয় পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক। ওই সময় জঙ্গি শফিউল ও স্থানীয় তরুণ জাহিদুল ইসলাম ওরফে তানিমকে আটক করা হয়। পরে একই বছরের ৪ আগস্ট ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ডাংরি এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শফিউল নিহত হন।
ঘটনার তিন দিন পর ১০ জুলাই পাকুন্দিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২৮ নভেম্বর মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ১৯ জন নিহত হন। বাকি আসামিরা দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী আছেন।