কুষ্টিয়ার খোকসায় মাইক্রোবাসের চাপায় দুই বোনসহ একই এলাকার চার শিশু নিহতের ঘটনায় গাড়িচালক কাবের আলীকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঈদগাহপাড়া থেকে র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আজ বুধবার র্যাবের কুষ্টিয়া ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান। গ্রেপ্তার কাবের আলী চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আমতৈল গ্রামের বাসিন্দা।
খোকসা উপজেলায় কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক সড়কের শিমুলিয়া এলাকায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাতটার দিকে স্থানীয় মক্তব থেকে পড়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় পাঁচ শিশুকে চাপা দেয় একটি মাইক্রোবাস। এতে মিম খাতুন (১২), তানজিলা আক্তার (১৪), মারিয়া খাতুন (১১) ও যুথী খাতুন (৯) মারা যায় এবং ফাতেমা খাতুন (৯) নামের অপর এক শিশু আহত হয়।
প্রতিবাদে সেদিন কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ করেন। চার শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ওই দিন ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর থেকে মাইক্রোবাসচালক পলাতক ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, মামলার পর র্যাব আসামি ধরতে নজরদারি বাড়ায়। মাইক্রোবাসটির মালিক কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন। তাঁর কাছ থেকে চালকের মুঠোফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পলাতক মাইক্রোবাসচালককে ধরতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এর আগে মেহেরপুরের গাংনীতে দুবার অভিযান চালিয়েও তাঁকে ধরা সম্ভব হয়নি। কাবের আলী গাংনী উপজেলার ঈদগাহপাড়ায় তাঁর বোনের বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে গতকাল রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাইক্রোবাসচালক দুর্ঘটনার আগের দিন চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে প্রবাসীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ফিরছিলেন। প্রায় ১০ ঘণ্টা টানা গাড়ি চালানোর কারণে তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়ির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার। এ কারণে কুষ্টিয়ার খোকসায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।