দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক (৮০) মারা গেছেন। আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। আমিনুল হকের ছেলে আছিফুল হক বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
আমিনুল হক ২০০৬ সালে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি ১৯৮৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একাধিকবার পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে রেখে গেছেন।
আছিফুল হক বলেন, তাঁর বাবা মামলার শুনানিতে অংশ নিতে গত সোমবার ঢাকায় যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর পাঁচটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা, হৃদ্রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি আরও বলেন, আজ বিকেলে আমিনুল হকের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নজিপুরে পৌঁছাতে পারে। জানাজা শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ আসন থেকে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন আমিনুল হক। তা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর মনোনয়নপত্রে বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে প্রার্থিতা বাতিল করেন। পরবর্তীকালে আমিনুল হক প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানি শেষে গত বুধবার হাইকোর্ট আমিনুল হকের প্রার্থিতা বৈধ বলে রায় দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পরের দিনই তাঁর মৃত্যু হলো।
নওগাঁ-২ আসনে আমিনুল হক ছাড়াও আরও তিনজন প্রার্থী আছেন। তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুল ইসলাম।
প্রার্থীর মৃত্যুর পর ওই আসনের নির্বাচন কার্যক্রম স্থগিত থাকবে কি না, তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. গোলাম মওলা বলেন, ‘আজ সকালে সাংবাদিকদের মাধ্যমে নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীর মৃত্যু ও নির্বাচন কার্যক্রম নিয়ে আইনে কী আছে, তা দেখে সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত জানানো হবে।’