টাঙ্গাইলের সখীপুরে রঙিন ফুলকপি চাষ করে প্রথমবারেই সফল হয়েছেন লাইলী বেগম। গতানুগতিক সাদা রঙের ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় এ সফলতা এসেছে। সখীপুরে রঙিন ফুলকপি চাষের বিষয়টি নতুন হওয়ায় আশপাশের অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন লাইলীর খেত দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। লাইলী উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের শ্রীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মমিনুলের স্ত্রী।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, ‘বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের’ আওতায় সখীপুরে চলতি বছর শীত মৌসুমে রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প থেকে উপজেলায় একমাত্র চাষি লাইলী বেগমকে পরীক্ষামূলকভাবে ১ হাজার ৪০০ রঙিন কপির চারা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ হাজার হলুদ ও ৪০০ বেগুনি রঙের। এ ছাড়া তিনি আরও ১ হাজার ২০০ সাদা রঙের ফুলকপিরও চাষ করেছেন। গত বছরের ১৫ নভেম্বর বাড়ির পাশের ৩০ শতাংশ জমিতে লাইলী চারাগুলো রোপণ করেন।
মাত্র দুই মাসের মাথায় লাইলী বেগমের সবজিখেতে শোভা পাচ্ছে হলুদ, বেগুনি ও সাদা রঙের ফুলকপি। ১৫ দিন ধরে লাইলীর স্বামী মমিনুল রঙিন কপি বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। লাইলী প্রথম আলোকে বলেন, রঙিন ফুলকপি চাষে তাঁর সাত হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি ২০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছেন। আরও ১০ হাজার টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ লাইলীর ফুলকপি খেত দেখতে এসেছেন। কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে বাগান থেকেই কপি কিনে নিচ্ছেন। সবজিখেত দেখতে আসা উপজেলার গড়গোবিন্দপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমারও ইচ্ছা আছে রঙিন ফুলকপি চাষ করার। এই জন্য সামনাসামনি দেখতে আসছি। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে।’
উপজেলার ইন্দারজানি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এই এলাকার মানুষ আগে কখনো রঙিন ফুলকপি চাষ করেননি। তাই উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে এই সবজি দেখার জন্য প্রতিদিন মানুষ আসছেন। এমনকি কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাও এই পরিদর্শন করে গেছেন।
লাইলির স্বামী মমিনুল ইসলাম বলেন, সাধারণত সাদা একটি ফুলকপি বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে প্রতিটি রঙিন ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে অহরহ বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে নেওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আয়েশা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কৃষকের মধ্যে কৃষিবিষয়ক নতুন তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে মাঠপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলায় একমাত্র লাইলী বেগমকেই এবার রঙিন কপি চাষে সহযোগিতা করা হয়েছে। লাইলী বেগম সফল হওয়ায় আগামী বছর রঙিন ফুলকপির চাষির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজারে রঙিন ফুলকপির চাহিদাও বেশ। এ ছাড়া রঙিন ফুলকপি পুষ্টিকর এবং খেতেও সুস্বাদু।