কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান হত্যা মামলায় আনিসুর রহমান ওরফে টিপু (৪৯) ও মোহাম্মদ আরিফুর রহমান ওরফে জিয়ন (৪৬) নামের দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর মধ্যে আনিসুর কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও আরিফুর জেলা যুবলীগের কর্মী। আজ সোমবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল আলম তাঁদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার ওই দুই ভাই কুড়িগ্রাম পৌর শহরের নাজিরা ব্যাপারীপাড়া এলাকার মৃত আবদুর রউফ মণ্ডলের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গিয়ে হামলায় আহত হন আশিকুর রহমান ও তাঁর ছোট ভাই আতিকুর রহমান। মাথায় আঘাত পেয়ে আশিকুর বাড়িতে ফিরে আসেন। অবস্থার অবনতি হলে ১৮ আগস্ট তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হলে ১ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।
নিহত আশিক কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ী ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে। তিনি উলিপুরের পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আশিক হত্যার ঘটনায় ১০ অক্টোবর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সেনের খামার গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় হত্যার অভিযোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়। এতে ১০৪ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ ওরফে মঞ্জু, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক ফারুক, সাংবাদিক হুমায়ূন কবির ওরফে সূর্য ও ইউসুফ আলমগীরের নাম রয়েছে।
এই মামলায় পুলিশ এর আগে এজাহারভুক্ত ৭ নম্বর আসামি আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছিল। বর্তমানে তিনি আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে আছেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের মধ্য থেকে তদন্ত সাপেক্ষে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।