শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টিতে নতুন করে চারটি ইউনিয়নের ৭১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নালিতাবাড়ী থেকে নকলা উপজেলার দুই লেন সড়কটিও ডুবে গেছে।
পানিবন্দী মানুষদের সরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীর চারটি স্পিডবোট কাজ করছে। এ ছাড়া সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের কাজ অব্যাহত আছে।
নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়লেও উজান এলাকায় নদীগুলোতে পানি কিছুটা কমেছে। শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ১০টায় ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া সকাল থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে বয়ে আসা ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে পাহাড়ি ঢল নামে। এ সময় নদী দুটির বিভিন্ন অংশ ভেঙে ও বাঁধ উপচে ঢলের পানিতে উপজেলার পোড়াগাঁও, নয়াবিল, নন্নী, রামচন্দ্রকুড়া, বাঘবেড় ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল রাত থেকে উজানের পানি নিম্নাঞ্চল যোগানিয়া, মরিচপুরান, কলসপাড় ও রাজনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যোগানিয়া ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবার, মরিচপুরান ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের ১২ হাজার পরিবার, কলসপাড় ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার ও রাজনগর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধার করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছাড়াও সেনাবাহিনী কাজ করছে।
যোগানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, রাত থেকে যোগানিয়া ইউনিয়নের ২৭টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। এ ছাড়া সড়কে পানি থাকায় নালিতাবাড়ী থেকে নকলা উপজেলায় যাতায়াতের দুই লেন সড়কের বিভিন্ন অংশ পানিতে ডুবে গেছে।
কলসপাড় ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। লোকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্কুল ও সড়কে নিয়ে আসা হচ্ছে।
উজানের পানি ভাটিতে নেমে যাওয়ায় নতুন করে এই চার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা চারটি স্পিডবোটের মাধ্যমে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছেন। এ ছাড়া গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত ১৫ হাজার পানিবন্দী মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কাজ অব্যাহত আছে বলে জানান ইউএনও।