টানা ২৮ দিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম থেকে আন্তনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে মহানগর এক্সপ্রেস। প্রথম দিনেই ট্রেনে যাত্রী পূর্ণ ছিল।
আন্তনগর ট্রেন চালু করায় যাত্রীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এতে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন বলে জানান তাঁরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন সংঘাতে রূপ নিলে গত ২০ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১ আগস্ট থেকে স্বল্প দূরত্বে মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালু করা হয়েছিল। চলেছিল কিছু মালবাহী ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেনও।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয় এবং তিনি ভারতে চলে যান। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। কারফিউ কিংবা কোনো বাধানিষেধও নেই। তবে রেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার থেকে লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর আজ আন্তনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
আন্তনগর ট্রেন চালু হলেও আজ প্রথম দিন সকালের আন্তনগর চলেনি। সকালের ট্রেনগুলো কোটা আন্দোলনের সময় বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছিল। এখন সেগুলোকে চট্টগ্রামে আনা হচ্ছে। কাল শুক্রবার থেকে নির্ধারিত সব ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা।
আন্তনগর ট্রেন চালু করার কারণে সন্তোষ প্রকাশ করেন মহানগর এক্সপ্রেসের যাত্রী ফজলে রাব্বী। তিনি বলেন, সব দিক দিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ নিরাপদ। তাই সব সময় চেষ্টা করেন ট্রেনে করে যাতায়াতের জন্য। এখন ট্রেন চালু হয়েছে, যেতে পারছেন। ভালো লাগছে।
চট্টগ্রাম থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন মো. বাকের। তিনি বলেন, সব কটি ট্রেন চালু করে দেওয়া দরকার। এখন পরিস্থিতি শান্ত। সবকিছু স্বাভাবিক। ট্রেন চালু করার কারণে মানুষ উপকৃত হবেন।
শাহ জাহান আলী সরকার নামের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, ট্রেন কখন চালু হবে তার অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় যাতায়াতে আর তেমন ভোগান্তি থাকবে না।
আজ বিকেল থেকে নির্ধারিত সব ট্রেন চলাচল করবে। এসব ট্রেনের প্রায় সব আসনের টিকিটও বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় আজ ট্রেনগুলোর টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পর্যায়ক্রমে মালবাহী, লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এখন আন্তনগর ট্রেনও চলছে। প্রথম দিনেই মহানগর এক্সপ্রেসের সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। ট্রেনে প্রচুর যাত্রী ছিল।