গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, ‘আজকের এই দিনে আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি অন্তর্বর্তী সরকারকে, যারা দলমত–নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে আজকে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় অনুষ্ঠান করেছেন। এবার একটা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের বাংলাদেশে। আমাদের প্রত্যাশা, যে জন–আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে ছাত্র–জনতা লড়াই করে, সংগ্রাম করে পরিবর্তনটা এনেছে, তা টেকসই ও স্থায়ী হতে হবে।’
মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে নুরুল হক আজ সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নুরুল হক বলেন, ‘গত দেড় দশকে দেশে একটি ফ্যাসিবাদী সরকার ছিল, সেখানে বিরোধী দল করার কারণে আমাদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, নাজেহাল হতে হয়েছে। আজ অনাড়ম্বর পরিবেশে বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেন।’
গত ১৫ বছরে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে একটা বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণ করা, সেটা কিন্তু অতটুকু গত ১৫ বছরে আমরা সেভাবে পাইনি। যার ফলে গোটা দেশের মানুষের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা নতুন করে বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এটি ধারণ করতে হবে, বাস্তব রূপ দিতে হবে। বিশেষ করে ছাত্র-জনতা, তরুণেরা যেভাবে এই ফ্যাসিস্ট শক্তিকে রুখে দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন করার জন্য ভবিষ্যতে তারা কাজ করবে, আমরা সেই প্রত্যাশা করি।’
যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে সহযোগিতা করবে এবং সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করবে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নুরুল হক। তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন দলের মতামত আছে। আজকের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করি। এ দেশের কৃষক–শ্রমিক–সাধারণ মানুষ কেন জীবন দিয়েছে? তারা বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক একটা ইনক্লুসিভ সমাজ চেয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলো এটি বাস্তবায়ন করেনি নানা কারণে। আজ যেহেতু একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলো এই সরকারকে সহযোগিতা করবে। আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলোর বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতা করবে এবং সরকার সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।’