বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে আজ সোমবার দুপুরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে একদল শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ও প্রক্টর আবদুল কাইউমের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি দেবেন।

আজ বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হন। এরপর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সমাবেশ করেন। পরে তাঁরা এই দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমান উপাচার্য ও প্রক্টর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন। ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ সমন্বয়কদের ধরে নিয়ে গেলেও তাঁরা বাধা দেননি; বরং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দমন করতে সহায়তা করেছেন। ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিচার হামলা ও গুলি বর্ষণে অন্তত ৬০ শিক্ষার্থী আহত হন। এই হামলা ঠেকাতে তাঁরা নির্লিপ্ত ছিলেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর পদে তাঁদের বহাল থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, উপাচার্য ও প্রক্টরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের তাঁবেদারি করার কারণে তাঁদের কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন করা যায়নি। এ জন্য এই উপাচার্য ও প্রক্টর যত দিন শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে থাকবেন, তত দিন সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ শিক্ষার্থীরা পাবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনো চলত বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই মেয়রের কথায়। উপাচার্য, প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় বেশি সময় দিতেন। এমনকি তাঁরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত।

সমাবেশে উপাচার্য ও প্রক্টরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব স্তরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিযুক্ত ব্যক্তিদের গণপদত্যাগের সম্মুখীন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
সমাবেশে মার্কেটিং বিভাগের মো. সিহাব, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের মোশারফ হোসেন, বাংলা বিভাগের আশিক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।
মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছিলেন। গত বছরের ৮ নভেম্বর তৎকালীন উপাচার্য ছাদেকুল আরেফিনের চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর তিনি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছিলেন। চলতি বছরের ৪ মার্চ তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এদিকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল কাইউম ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব পান।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ও প্রক্টর আবদুল কাইউমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।