রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সময় ৬১ রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে কক্সবাজারের উখিয়া থানার পুলিশ। পরে তাদের যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়কের উখিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনে অস্থায়ী তল্লাশিচৌকি বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে তাদের আটক করা হয়। প্রথম আলোকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
পুলিশ সূত্র যায়, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের থেকে প্রতিদিন বিভিন্নভাবে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা পালিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। সুযোগ পেলে রোহিঙ্গারা দূরপাল্লার বাসে করে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় পাড়ি দিচ্ছে। এর মধ্যে অল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটকও হচ্ছে।
ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আটক রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বের হচ্ছে। রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে বের হওয়ার নিয়ম নেই। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয়শিবিরগুলোর ভেতরে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১০টি তল্লাশিচৌকি স্থাপন করা হয়েছে। এসব চৌকির নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যাওয়ার সময় গত ৪ দিনে ১৭৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। আটক হওয়াদের কুতুপালং রেজিস্টার্ড আশ্রয়শিবিরের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সহকারী ও ক্যাম্প ইনচার্জের (সিআইসি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আটক রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, আগে রোহিঙ্গাদের জন্য জনপ্রতি ১২ ডলার করে বরাদ্দ ছিল। বর্তমানে তা কমিয়ে ৮ ডলারের আনার পর থেকে রোহিঙ্গাদের পারিবারিক খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই তারা কাজের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে পাড়ি দিচ্ছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যারা বিনা অনুমতিতে আশ্রয়শিবির থেকে বাইরে যাচ্ছে, তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হচ্ছে। কাউন্সেলিং ও এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে তাদের ধারণা দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে একই রকম অপরাধে ধরা পড়লে তাদের জেল-জরিমানার ভয় দেখানো হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের ট্রানজিট ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।