তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা পালনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে। এর মধ্যে কোনো পক্ষ বা কেউ ঝামেলা করার চেষ্টা করলে তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল্লাহ আল মামুন।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরের ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন শেষে শহীদ আহসান উল্যাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে ২১ জানুয়ারি রাতে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে একটি মসজিদে ঢোকাকে কেন্দ্র করে তাবলিগের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তাবলিগের দুই পক্ষের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা কোনো ঝামেলা করবেন না, শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা করবেন। ইজতেমা সম্পাদনে এক পক্ষ আরেক পক্ষক সহায়তা করবে। আমরা বিশ্বাস করি, তাঁরা তাঁদের কথা রাখবেন। কিন্তু এরপরও যদি কেউ ঝামেলা করতে চান, তবে সেটা মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।’
ইজতেমা উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার থেকেই ইজতেমা মাঠে জড়ো হচ্ছেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। মাঠে এখন হাজারো মুসল্লি। এর মধ্যে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইজতেমা মাঠের বিদেশি কামরার সামনে দিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মো. মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম প্রমুখ। প্রথমে তাঁরা মাঠ ও কয়েকটি কামরা পরিদর্শন করেন। পরে সংবাদ সম্মেলন করে ইজতেমার বিষয়ে প্রস্তুতির কথা জানান।
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ইজতেমা উপলক্ষে আমরা সব রকম আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। ইজতেমার কয়েক দিন র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন বিভাগ ও বাহিনীর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সদস্য সার্বক্ষণিক নজর রাখবেন। গাজীপুর বা ঢাকা মহানগর পুলিশের বাইরেও সারা দেশ থেকে আনা পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন স্তরে মোতায়েন থাকবেন।’
দেশবাসীকে কোনোরকম গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘একটি মহল দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন দল, গ্রুপের মাঝে বিরোধ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আমি সম্মানিত নাগরিকদের অনুরোধ করব, আপনারা তাদের গুজবে কান দেবেন না। আমরা সব সময় আপনাদের সেবায় নিয়োজিত।’