রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েছিল শিশু মন্দিরা রানী (৮)। রাতে হঠাৎ শিশুটির চিৎকার শুনে মা–বাবা দৌড়ে গিয়ে দেখেন, শিশুটির বাঁ হাতের আঙুলে কামড়ে ধরে আছে কালো রঙের একটি সাপ। পরে তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সাপটিকে ধরতে পারলেও হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সোমবার গভীর রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের মোলানী ধামপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া শিশু মন্দিরা রানী ওই এলাকার কৃষক প্রসন্ন কুমার বর্মণ ও ইতি রানী দম্পতির একমাত্র মেয়ে। সে স্থানীয় মোলানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
শিশুটির স্বজনদের বরাত দিয়ে আলোয়াখোয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন ওরফে নজিবুল বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে বিছানায় ঘুমাচ্ছিল শিশুটি। হঠাৎ তার চিৎকার শুনে ছুটে যান মা–বাবা। ঘরে আলো জ্বালিয়ে দেখেন, শিশুটির বাঁ হাতের কনিষ্ঠ আঙুলে একটি সাপ কামড়ে ধরেছে। লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়েও সাপটি পালাচ্ছিল না। এ সময় তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সাপটিকে ধরে বস্তাবন্দী করেন। পরে শিশুটির হাত বেঁধে ওঝাকে খবর দেন পরিবারের লোকজন। রাতে দুজন ওঝা বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করেও বিষ নামাতে পারেননি।
জসিম উদ্দিন বলেন, পরে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে স্বজনেরা তাকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। সঙ্গে সাপটিকেও নেন। দিবাগত রাত তিনটার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শিশুটি মারা যায়। পরে সাপসহ শিশুটির লাশ বাড়িতে ফেরত আনেন স্বজনেরা। খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আটোয়ারী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে শিশুটির লাশ দাহ করার সময় স্থানীয় লোকজন সাপটিকে মেরে ফেলেছেন বলে জানান ওই ইউপি সদস্য।
আটোয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা শিশুটিকে সাপ কামড় দেওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে। সকালে লাশ দাহ করার সময় সাপটি মেরে ফেলেছেন স্থানীয় লোকজন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।