মুন্সিগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, আসামি ১৩৬৫, গ্রেপ্তার ২৬

মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের এক সদস্যকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। বুধবার বিকেল পৌনে চারটায়
ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলটির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। মামলা দুটিতে ১ হাজার ৩৬৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির নেতা–কর্মী ও অজ্ঞাত ব্যক্তি আছেন। দুটি মামলায় ইতিমধ্যে ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, একটি মামলায় মুন্সিগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাইনউদ্দিন বাদী হয়ে সরকারি অস্ত্র–গুলি লুট ও মোটরসাইকেল পোড়ানোর অভিযোগে ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কামরুজ্জামান রতনকে। এ মামলায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ইতিমধ্যে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে মুক্তারপুরে শ্রমিক লীগের কার্যালয় ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগে মামলা করেন মুক্তারপুর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ও শ্রমিক লীগের নেতা আবদুল মালেক। এ মামলায় সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন আহম্মেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব প্রথম আলোকে বলেন, বুধবারের ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ইতিমধ্যে ২৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় নিরপরাধ কাউকে জড়ানো হবে না। প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এর আগে বুধবার বেলা তিনটার দিকে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির তিন নেতা-কর্মী হত্যার বিচার দাবিতে মুন্সিগঞ্জ শহরের মুক্তারপুর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, বুধবার বেলা তিনটার দিকে পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা মুক্তারপুর মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ তাঁদের সেখানে জড়ো হতে নিষেধ করলে তাঁরা মুক্তারপুর থেকে ট্রাকে পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় যান। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। তখন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম একটি মিছিলের ব্যানার ধরে টান দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সেই ঘটনায় বিএনপির নেতা–কর্মী, সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ৮০ জন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মুক্তারপুর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী শাওন খান (২২) ও বিএনপির সমর্থক জাহাঙ্গীর মাদবরের (৩৮) অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।