খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার এক নারীকে ধর্ষণ ও অপহরণে সহযোগিতা করার অভিযোগে হওয়া মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দসহ দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এর বিচারক রাকিবুল ইসলাম শুনানি শেষে দুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে তাঁদের আদালত চত্বরে আনা হলে বিক্ষুব্ধ কয়েকজন মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেন। কারাগারে পাঠানো অপরজন হলেন এমরান হোসেন গাজী। আদালতের নির্দেশে গত ১৭ অক্টোবর ডুমুরিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ, নারায়ণ চন্দ্র চন্দসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ। গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ওই নারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন হাসপাতালের ওসিসির (ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) সামনে থেকে কয়েকজন জোর করে ভুক্তভোগী নারীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ঠ সহচর ও অনুসারী। তাঁদের বাঁচাতে তৎকালীন মন্ত্রী অবৈধ প্রভাব বিস্তার করায় চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই ওই নারীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল।
অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ওই নারীকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়। ওই ঘটনায় ধর্ষণ ও অপহরণের শিকার ওই নারীর খালাতো ভাই পরিচয়দানকারী গোলাম রসুল বাদী হয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩–এর আদালতে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ করেন। পরে আদালত ঘটনাটি তদন্ত করে নগরের সোনাডাঙ্গা থানাকে মামলা করার নির্দেশ দেন। গত ১৭ অক্টোবর ডুমুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এ মামলার দুই নম্বর আসামি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে মামলার ২ নম্বর আসামি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও ৮ নম্বর আসামি ইমরান গাজীকে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এ হাজির করা হয়। তাঁদের আদালতে নেওয়ার আগে ক্ষুব্ধ জনতা নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। কয়েকটি ডিম তাঁর গায়ে লেগে শরীরের জামা নষ্ট হয়ে যায়।