সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন যশোর একটি হোটেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান। আজ বুধবার সন্ধ্যায় যশোরের একটি হোটেলে
সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন যশোর একটি হোটেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান। আজ বুধবার সন্ধ্যায় যশোরের একটি হোটেলে

ভারত বন্ধুবেশে এসে ৫৩ বছর বাংলাদেশে ডাকাতি করেছে: জামায়াতের আমির

ভারত বন্ধুবেশে এসে ৫৩ বছর ডাকাতি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ বুধবার সন্ধ্যায় যশোর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

যশোরের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষকে নিয়ে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা শাখা। এতে বিগত সরকারের কাছে নির্যাতিত ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের স্ত্রী–সন্তানেরাও অংশ নেয়।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘ভারত এল বন্ধুর বেশে, শুরু করে দিল ডাকাতি। এ কেমন বন্ধুত্ব। ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণে সব অস্ত্রই তারা নিয়ে গেছে। ৫৩ বছর ধরে আমাদের প্রাণের বন্ধু সেই গুলির একটি খোসাও ফেরত দেয়নি। এ কী ধরনের বন্ধুত্ব!’

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস নিয়ে মোদির টুইট বাংলাদেশকে ছোট করেছে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ছয় লাইনের একটি টুইট করেছে, সেখানে একটি লাইনেও বাংলাদেশের নাম নেই। এটা নাকি ভারতের বিজয় দিবস। এ দেশের বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে এত দিন চিৎকার করেছেন, তাঁরা মোদির এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি, প্রতিবাদ জানাননি। জামায়াতে ইসলামী তার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছে। আপনারা কেন চুপ ছিলেন? আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্তি পেলেও দিল্লির কাছে জিম্মি হয়েছিলাম। যদি এই দেশ স্বাধীন দেশ হয়, তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশ তার মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকবে।’

আওয়ামী লীগকে সমালোচনা করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শাসনের নামে শোষণ করতে গিয়ে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। তারা শুধু শারীরিকভাবে আঘাত দেয়নি। মানুষের মান–ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করেছে। তারা মানুষের রিজিক নিয়ে টানাটানি করেছে। আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে এই দেশটা ইজাদার দিয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিতে পারিনি। সেই কারণেই তার মূল্য আমাদের পরিশোধ করতে হচ্ছে। করে যেতে হচ্ছে।’

আওয়ামী লীগ শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘সব গুন্ডাপান্ডা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেবারে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করবে, নৈতিক শিক্ষায় উৎকর্ষ সাধন করবে। যার ফলে শিক্ষার পাট চুকিয়ে যাওয়ার শেষেই তাদের কাজ হাতে চলে আসবে। তাদের কারও করুণার পাত্র হয়ে থাকতে হবে না। এখন সার্টিফিকেটের নামে যে কাগজগুলো ধরিয়ে দেওয়া হয়, অনেকেই সেই কাগজগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা আগামীর বাংলাদেশে কাগজের সার্টিফিকেট দেব না; কোয়ালিটির সার্টিফিকেট তুলে দিতে চাই। আমরাই সেই শিক্ষাব্যবস্থা তুলে দেব আগামীর প্রজন্মের হাতে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম রসূলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জামায়াতের যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, সহকারী পরিচালক মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আহসান হাবিব, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা, সাংবাদিক ও গবেষক বেনজিন খান, জেলা শুরা সদস্য গাজী এনামুল হক প্রমুখ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবু জাফর সিদ্দিকী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, কর্মপরিষদ ও শুরা সদস্য নূর-ই-আলী নূর মামুন।