বরিশালের হিজলা উপজেলায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিশাল মাছের সাম্রাজ্য, চরের জমি, বালুমহাল দখল ও লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা। আজ সোমবার দুপুরে হিজলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে তাঁরা এসব ঘটনাকে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের ‘পরিকল্পিত অপপ্রচার’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব দেওয়ান মনির হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল গাফফার তালুকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাব হোসেন ওরফে খোকন দরজি, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক দেওয়ান সালাউদ্দিন ওরফে রিমন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান খান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা দাবি করেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিজলা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লুটতরাজ, জমি দখল, চর দখল, মাছঘাট, বালুমহাল দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে হিজলা উপজেলা বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে এসব নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সুনাম নস্যাৎ করার জন্যই এসব মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করানো হচ্ছে, যা বিএনপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।
সংবাদ সম্মেলনে দেওয়ান মনির হোসেন তাঁদের বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশ্ন তোলেন, হাজার হাজার গরু–মহিষ লুটপাট, মাছঘাট, বালুমহাল দখলসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু হিজলার কোনো সাংবাদিকের কাছে কি এর পক্ষে কোনো তথ্য আছে?
মনির হোসেন দাবি করেন, রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য স্বৈরাচার হাসিনার দোসররা পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের মিথ্যা রটিয়েছে। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বাদ দিয়ে বরিশালের কিছু সাংবাদিককে এ বিষয়ে তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করানো হয়েছে। তাঁরা এসব সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী যদি কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকেন, সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেঘনা নদীর ২২ কিলোমিটার অংশ বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত। এই ২২ কিলোমিটার তীরে অসংখ্য টংঘর তুলে মাছঘাট স্থাপনের মাধ্যমে চলে ইলিশ ধরা ও বেচাবিক্রি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাই সব সময় এসব ঘাট নিয়ন্ত্রণ করেন। গত ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর বিএনপি নেতারা এসব মাছঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।