নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল ‍টুর্নামেন্টের সব প্রস্তুতি নিয়েও অংশগ্রহণকারী দলে না আসায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়নি। গতকাল সকালে
নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল ‍টুর্নামেন্টের সব প্রস্তুতি নিয়েও অংশগ্রহণকারী দলে না আসায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়নি। গতকাল সকালে

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল

অনিয়মের অভিযোগ তুলে আসেনি উদ্বোধনী ম্যাচের দুই দল

ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সব আয়োজন শেষ হয়েছিল। তবে উদ্বোধনী ম্যাচে দুটি দলের কোনোটিই উপস্থিত না হওয়ায় শুরু করা যায়নি খেলা। ভেস্তে যায় টুর্নামেন্ট উদ্বোধনের সব আয়োজন। গতকাল শনিবার নোয়াখালী হাতিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করতে গিয়ে ঘটেছে এমন ঘটনা। জানা গেছে, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে অংশগ্রহণকারী দলগুলো টুর্নামেন্ট বয়কট করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, খেলার উদ্বোধন উপলক্ষে হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মাঠে অতিথি, খেলোয়াড় ও রেফারিদের জন্য পৃথক মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। মঞ্চে করা হয় বর্ণিল সাজসজ্জা। সকাল নয়টায় নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাও। মঞ্চের পাশে নির্ধারিত স্থানে অপেক্ষা করেন কয়েকজন রেফারি। হাতিয়া পৌরসভা একাদশ ও বুড়িরচর ইউনিয়ন একাদশ উদ্বোধনী ম্যাচে অংশগ্রহণ করার কথা। তবে দুটি দলের একটিও মাঠে হাজির হয়নি।

জানতে চাইলে অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারণে পৌরসভা একাদশ খেলায় অংশগ্রহণ করেনি বলে জানান হাতিয়া পৌরসভার মেয়র কে এম ওবায়েদ উল্যা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেলা পরিচালনার দায়িত্ব থাকার কথা ক্রীড়া সংস্থার হাতে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন সবকিছু দেখভাল করছেন, যা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। এ ছাড়া খেলা পরিচালনার জন্য টাকা চেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বারবার ফোন দেওয়া হচ্ছে। অথচ এই খেলা পরিচালনার জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে।’

আরেক দল বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খেলা পরিচালনায় যে অর্থ ব্যয় হবে, তা উপজেলা পরিষদ সমন্বয় সভায় আলোচনা করার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা না করে খেলা শুরু হওয়ার আগে ইউএনও অফিস থেকে পিয়ন দিয়ে বারবার ফোন দেওয়া হচ্ছে টাকার জন্য। এর আগে গত দুই বছর আমরা টুর্নামেন্টের জন্য অনেক টাকা খরচ করেছি। এই খাতে সরকারি বরাদ্দ কোথায় যায়? অনিয়মের কারণেই খেলায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

হাতিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব আইয়ুব উল্লাহ বলেন, ‘পদাধিকার বলে আমি টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব। কিন্তু খেলা পরিচালনার আয়-ব্যয়ের কোথাও আমার সম্পৃক্ততা নেই। এমনকি খেলা পরিচালনার জন্য চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে যে অর্থ নেওয়া হচ্ছে, তাতেও আমার সম্মতি নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে ইউএনও কোনো পরামর্শও করেননি। এ কারণে আমিও টুর্নামেন্ট থেকে সরে এসেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শুভাশীষ চাকমা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ক্রীড়া সংস্থার সদস্যসচিব ও ইউপি চেয়ারম্যানরা যে অভিযোগ করেছেন, তা সঠিক নয়। ক্রীড়া সংস্থার বৈঠক করেই টুর্নামেন্টের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া কোনো জনপ্রতিনিধিকে টাকা দেওয়ার জন্য কোনো চাপ দেওয়া হয়নি। তবে আগে থেকে প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজনে নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করতেন। এবারও তাঁদের সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু টুর্নামেন্টের রেফারি নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করা যায়নি। এখন তাঁরা যদি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেন, তাহলে টুর্নামেন্ট হবে। না হলে ফিরে এসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, ইউএনও শুভাশীষ চাকমা প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে অবস্থান করছেন।

এবার টুর্নামেন্টে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ১টি করে ১১টি; পৌরসভার ১টি দলসহ ১২টি দল অংশগ্রহণ করার কথা।