দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০ টায় চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে
দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০ টায় চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে

তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা

বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল নয়টায় রাস্তায় গাছ ফেলে, ব্যারিকেড দিয়ে ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।

গতকাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। পরে রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় আসেন চুয়েটের উপাচার্য রফিকুল আলম, সহ–উপাচার্য জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রমুখ। এ সময় রেজিস্ট্রার শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জানান। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের মেনে নেওয়া দাবি রাতের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশের শর্তে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করে কাপ্তাই সড়ক ছেড়ে দেন। তবে সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আজ সকাল ৮টা থেকে আবারও সড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০ টায় চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন তাঁদের কিছু দাবি মেনে নিলেও সব দাবির সঙ্গে একমত হতে পারেনি। এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকেরা আমাদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছেন বলে মৌখিকভাবে বলেছেন। বিষয়টি আমরা আজ রাতের মধ্যে লিখিতভাবে দেখতে চাই। নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাস মালিক সমিতি দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এ ছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি বাস ও ৪টি অ্যাম্বুলেন্সের দাবি জানালেও তারা আমাদের ১টি বাস ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের বিষয়ে জানিয়েছে। শাহ আমানত ও এ বি ট্রাভেলসের বাস এ সড়কে চলবে না বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এদের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি আমরা মানবিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুমন দের বরখাস্ত এবং পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিলাম। সে বিষয়েও আমরা কোনো ধারণা পাইনি।’

আশিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘পণ্যবাহী ট্রাকের কথা বিবেচনা করে এবং প্রশাসনের মেনে নেওয়া দাবি রাতের মধ্যে লিখিত আকারে প্রকাশ করার শর্তে আমরা রাতে রাস্তা ছেড়ে দিই। আমাদের বাকি দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে আজ সকাল ১০টা থেকে আমরা আবারও রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি। সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

দুই সহপাঠীর মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নেয় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ১০ টায় চুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের সড়কে

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিকেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে যেসব আমাদের হাতে আছে, সেগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। দ্রুত সেগুলোর বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বেশ কিছু দাবি রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ। সেগুলোর জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আজ তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামে।