ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার যুবক ফারহান রনি। গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গাজির বাজার এলাকায়
ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার যুবক ফারহান রনি। গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গাজির বাজার এলাকায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারীর খণ্ডিত দেহ পোড়ানোর চেষ্টার ঘটনায় মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হরমুজা বেগম (শারমিন) নামের এক নারীর খণ্ডিত দেহ পোড়ানোর চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে আখাউড়া থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করেন তাঁর মেয়ে রুমা আক্তার। পরে আটক ফারহান রনি (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

নিহত হরমুজা বেগম (৬২) উপজেলার হীরাপুর এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী। গ্রেপ্তার ফারহান রনি আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন শাখা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার ছেলে। তাঁদের বাড়ি রহিমপুর গ্রামে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া পলাতক।

মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, গতকাল সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে তাঁর (রুমা আক্তার) বাবা কুলা বিক্রির জন্য ঘর থেকে বের হন। সকাল ৬টা ২০ মিনিটের দিকে সেখানে যান ফারহান। তাঁর বাবা অসুস্থ বলে হরমুজাকে নিজেদের বাড়িতে যেতে অনুরোধ করেন। পরে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে রহিমপুর পূর্বপাড়ায় ফারহানের পরিত্যক্ত ও ভাঙা ঘরের দোচালা টিনের চালের নিচে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হরমুজাকে হত্যা করেন ফারহান। একপর্যায়ে মাথা সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে ৩০০ গজ দূরে পুকুরের দক্ষিণ পাশের জমিতে গর্ত করে রাখেন ফারহান। এরপর তিনি মাথাবিহীন শরীরের বাকি অংশে কম্বলে পেঁচিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেন।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, ফারহান মাদকাসক্ত। তিনি বিভিন্ন রকম তথ্য দিচ্ছেন। নিহতের এক মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, এতে বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ওসি মো. ছমিউদ্দিন বলেন, ফারহান ওই নারীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, ওই নারীর মাথার খণ্ডিত অংশ এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

আখাউড়ার গাজীরবাজার এলাকায় গতকাল সকালে পরিত্যক্ত টিনের ভাঙা ঘর থেকে ধোঁয়ার গন্ধ বের হতে দেখেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। সেখানে থাকা ফারহান তাঁদের জানান, তিনি পাতা পোড়াচ্ছেন। পরে গ্রামের লোকজন গিয়ে গর্তে পুড়তে থাকা লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি পোড়া দেহ উদ্ধার করে। পোড়া হাতে চুড়ি থাকায় দেহটি প্রাথমিকভাবে নারীর বলে ধারণা করা হয়। তখন ঘটনাস্থল থেকে ফারহানকে আটক করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল থেকে ২০০-৩০০ গজ দূরে পুকুরের পাশের একটি ফসলি জমি খনন করে মাটির নিচ থেকে খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হরমুজা বেগমের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্বজনেরা।