কলাপাড়ায় ফিরে দলের সংবর্ধনা পেলেন বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেন

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উপজেলায় গণসংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘুষ নেন, সে দেশের মানুষ কখনো ভালো থাকতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে লাখ-হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে পাঠিয়েছে। এ দেশের টাকা পাচার করে আওয়ামী লীগের লোকেরা কানাডায় ‘বেগম পাড়া’ করেছে, মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ করেছে।

আজ রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন মাঠে মোশাররফ হোসেনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সরকার পরিবর্তনের পর মোশাররফ হোসেন আজ প্রথম তাঁর নির্বাচনী এলাকা কলাপাড়ায় আসেন। নেতা-কর্মীরা কয়েক শ মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে বরগুনার আমতলী উপজেলা থেকে তাঁকে নিয়ে আসেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব স্নেহাংশু সরকার।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের মূর্ত প্রতীক উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার নামে শেখ হাসিনা মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর কারাগারে রেখেছেন। আমাদের নেত্রী কিন্তু বাংলাদেশ থেকে চলে যাননি। এর কারণ হলো, খালেদা জিয়া এ দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। খালেদা জিয়া সব সময় বলেন, বিদেশে তাঁর বন্ধু আছে, প্রভু নেই।’

সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান ও সদ্য সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমানের কথা উল্লেখ করে সভায় জেলা বিএনপির সদস্য মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কলাপাড়ায় যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের আপনারা দেখেছেন। তাঁদের একজন ছিলেন মাহবুব, আরেকজন ছিলেন মহিব। তাঁরা দুজন এ দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের সব সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য আপনাদের এ বি এম মোশাররফ হোসেনের পাশে থাকতে হবে।’

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হলেও দুপুরের আগেই নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে সমবেত হতে থাকেন। বেলা তিনটার মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থল লোকে–লোকারণ্য হয়ে যায়। কলাপাড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ বলেন, ১৫ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীদের জেল-জুলুম সহ্য করে দিন পার করতে হয়েছে। স্থানীয়ভাবে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা-মারধর করেছেন। সেদিক পর্যালোচনা করলে ১৫ বছর পর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি। এ কারণে নেতা-কর্মীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ মুসুল্লী, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ ফারুক, মহিপুর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল জলিল হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান পারভেজ প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়।