পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে একটি পরিত্যক্ত পুকুর প্রায় পাঁচ বছর ধরে ময়লা-আবর্জনায় ভরে ছিল। তবে সেখান থেকে জঞ্জাল সরিয়ে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কার্যক্রমে গতকাল মঙ্গলবার সকালে অন্তত ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন। তাঁরা বলছেন, ৪/৫ ঘণ্টার মধ্যে পুকুরটি পরিষ্কার জঞ্জালমুক্ত হয়েছে। তবে এটি পুরোপুরি পরিষ্কার করতে আরও এক-দুই দিন সময় লাগবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাজার পর্যবেক্ষণ, সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা শহর পরিচ্ছন্ন করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে উপজেলা শহর সুবিদখালীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কচুরিপানা ও ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ পুকুরটি পরিবেশ বিনষ্টের পাশাপাশি জীবাণু ছড়াচ্ছিল। পাশের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, বাসাবাড়ি, দোকানপাটের পরিবেশ নষ্ট হলেও পুকুরের আবর্জনা পরিচ্ছন্নতায় কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের এই সামাজিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুকুর পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত শিক্ষার্থীরা জানান, পুকুর পরিষ্কারের পাশাপাশি গত সাত দিনে শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও বিভিন্ন পয়েন্টের ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন, বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন শিক্ষার্থীরা।
পুকুরটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র গোলাম রাব্বানী, সাইফুল ইসলাম সিয়াম, অর্জুন ঋষি, মিজান সজল, মাসুম, জাহিদুল ইসলাম, বান্না, শাওন, হৃদয়, সাব্বিরসহ ৫০ জন অংশ নেন।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিএম কলেজের সমন্বয়ক মো. রাব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, পুকুরটি মজা অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে ছিল। গতকাল সকাল থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছায় পুকুরটি পরিষ্কার কাজে অংশ নেন। এটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে আরও দুই দিন সময় লাগবে। এ ধরনের সামাজিক কাজ অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষার্থীদের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। আশা করি সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’