কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমায় স্বস্তি, তবে রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকি

ধরলা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন নিজের বসতভিটায় দাঁড়িয়ে এক নারী। সোমবার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের নামা জয়কুমার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। পশুচারণভূমিগুলো জেগে উঠেছে। এতে মানুষজনের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। তবে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙনের ঝুঁকি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, জেলার সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদ অববাহিকায় উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেগমগঞ্জ, সাহেবের আগলা ও নয়ারহাট ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আগামী দুই দিন স্থিতিশীল থেকে ওই ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে সাময়িক প্লাবন হতে পারে। তবে আগামী সাত দিন কুড়িগ্রামে বড় কোনো বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মশালের চরের বাসিন্দা আজিজল সরদার বলেন, বন্যার পানি কমায় স্বস্তি দেখা দিলেও ভাঙন আতঙ্কে আছেন চরবাসী। তিনি বলেন, ‘ভাই বানে তো আমাগো বড় কোনো সমস্যা নাই। ঘরে পানি উঠে, রাঁধন-খাওন কষ্ট ছাড়া আর কোনো কষ্ট নাই। কিন্তু পানি কমে গেলে ভাঙন দেখা দেয়। নদী যদি চর ভেঙে নেয়, তাহলে কই যামু। আমাগো যাওয়ার কনু (কোন) জায়গা নাই। পানি বাড়ার সময় ভাঙছে, পানি কমলে আবার ভাঙন শুরু হইব।’

চিলমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, এটা সুখবর; কিন্তু তাঁর ইউনিয়নে ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ইউনিয়নটির শাখাহাতি, কড়াইবরিশাল, গাজিরপাড়া, মোনতলাজুড়ে সাত কিলোমিটার এলাকা ভাঙনকবলিত।

কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ব্রহ্মপুত্র নদ অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের যাত্রাপুর, সাহেবের আগলা ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের শতাধিক বসতবাড়ি এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে। এই বন্যাকবলিত মানুষেরা সরকারিভাবে ১০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি সমতলে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে জেলার সব নদ-নদীর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে। আগামী সাত দিন কুড়িগ্রামে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই।