পিচঢালাই উঠে সৃষ্টি হওয়া খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এর মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গতকাল মতলব পৌরসভার টিঅ্যান্ডটি এলাকায়
পিচঢালাই উঠে সৃষ্টি হওয়া খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এর মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গতকাল মতলব পৌরসভার টিঅ্যান্ডটি এলাকায়

এক কিলোমিটার সড়কে শতাধিক গর্ত, ভোগান্তি 

২০১৭ সালে মতলব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংক সড়কটি সংস্কার করা হয়। এরপর এটি আর সংস্কার করা হয়নি।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মতলব পৌরসভার এক কিলোমিটার দীর্ঘ ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংক সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই পিচঢালাই উঠে গিয়ে ইট, খোয়া ও বালু বের হয়ে আছে। এসব স্থানে তৈরি হয়েছে শতাধিক ছোট-বড় গর্ত। গর্তে বৃষ্টির পানি ও আবর্জনা জমে থাকায় এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরখানেক ধরে সড়কটির এ নাজুক অবস্থা থাকলেও এটি সংস্কারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।

মতলব পৌরসভার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে মতলব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংক সড়কের সর্বশেষ সংস্কার হয়। পৌরসভাটির উদ্যোগে এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়কের সংস্কারকাজে ব্যয় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। এরপর সেটির আর সংস্কার হয়নি। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওই সড়কের টিঅ্যান্ডটি, প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল, ছত্তর মাস্টারের মোড় ও পানির ট্যাংক এলাকায় দেখা যায়, এসব অংশে শতাধিক ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি ও ময়লা-আবর্জনা জমে তৈরি হয়েছে খানাখন্দের। কিছু অংশ দেবেও গেছে। বিপজ্জনক ওই সড়কেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, রিকশা ও ব্যক্তিগত (প্রাইভেট) গাড়িসহ আরও বিভিন্ন যানবাহন। গর্তের পানিতে বেশ কিছু যানবাহনকে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে দেখা গেছে। এসব স্থানে পথ চলতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

মতলব পৌরসভার দক্ষিণ কলাদী এলাকার স্কুলশিক্ষক সোহেল আহম্মেদ ও কবির হোসেন বলেন, এক বছর ধরে সড়কটির অবস্থা খারাপ। এখানে ছোট-বড় অনেক গর্ত। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে ছোট-খাটো পুকুরের মতো হয়ে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা, হাঁটাচলাই করা যায় না সড়কটিতে। খানাখন্দ থাকায় এ সড়ক দিয়ে রিকশা ও অটোরিকশাচালকেরা আসতে চান না। এলেও দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া রাখেন। এর ওপর ঝাঁকুনির যন্ত্রণা তো আছেই।

তাঁরা আরও বলেন, সড়কটি দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন। এটি মেরামতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। পৌর কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে স্থানীয় লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

টিঅ্যান্ডটি এলাকার মনির হোসেন বলেন, ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংক সড়ক দিয়ে উপজেলার দূরগাঁও, বোয়ালিয়া, টিঅ্যান্ডটি, পানির ট্যাংক, দশপাড়া, ভাঙ্গারপাড়, ধনারপাড়, দক্ষিণ ও মধ্য কলাদী এবং বাইশপুরসহ প্রায় ২০টি এলাকার অর্ধলক্ষাধিক লোক চলাচল করে। এ ছাড়া চাঁদপুর জেলা সদর, জেলার বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর ও হাজীগঞ্জ এলাকার লোকজন এ সড়কপথে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও নারায়ণগঞ্জে কম সময় ও টাকায় চলাচল করেন। সড়কটিতে প্রতিদিন কয়েক শ যানবাহন চলাচল করে। অথচ এটি মেরামতের উদ্যোগ নেই।

পানির ট্যাংক এলাকার অটোরিকশাচালক আলমাছ খান বলেন, ‘রাস্তাডায় গাড়ি নিয়া উঠলেই গর্তের কারণে ঝাঁকুনিতে জানের কিছু থায়ে না। গর্তে গাড়ি কাত অইয়া যায়। আটকাইয়া যায় মাঝে মাঝে। চাকাও বইসা যায়। সময় বেশি লাগে। রাস্তাডায় মাসে ১৫ থেকে ২০টা দুর্ঘটনা অইতাছে। রাস্তাডা মেরামতের কি কেউ নাই?’

এ ব্যাপারে মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য দুই মাস আগে সওজের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়েও পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে সংস্কার শুরু হবে। সড়ক মেরামতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ ভিত্তিহীন।