খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে সাতটি বাদে সব কটিতেই প্রথম হয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক। শুধু ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়টি কেন্দ্রের পাঁচটিতেই দ্বিতীয় তিনি। এ ছাড়া ৩ নম্বর ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রেও তিনি পিছিয়ে আছেন। ওই কেন্দ্র সাতটিতে প্রথম হয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আবদুল আউয়াল।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে প্রকাশিত কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলে এমন তথ্য জানা গেছে।
গত সোমবার খুলনা সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ইভিএম পদ্ধতিতে সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫, কাউন্সিলর পদে ১৩৬ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩৬ জন ভোট দিয়েছেন।
কেন্দ্রেভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। গড়ে ৬৫ শতাংশের বেশি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ৮৫ আর সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ৬৯ দশমিক ৫৮। ওই ওয়ার্ডে ৮ হাজার ৩৬০টি বৈধ ভোটের মধ্যে আবদুল আউয়াল পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৯১ ভোট ও খালেক পেয়েছেন ৩ হাজার ১৪১ ভোট। এ ছাড়া আবদুল আউয়াল ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ৭০ ভোট ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ৩২৮ ভোট বেশি পেয়েছেন।
গড়ে প্রায় ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের চারটি কেন্দ্রের দুটিতে প্রায় ৬৯ শতাংশ ও অন্য দুটির একটিতে প্রায় ৭৯ শতাংশ এবং আরেকটিতে প্রায় ৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। ওই ওয়ার্ডে মাত্র দুজন কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর মো. সুলতান মাহামুদ হেরে গেছেন শেখ খালিদ আহমেদের কাছে।
জানতে চাইলে খালিদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুজনই শক্তিশালী প্রার্থী। দুই পক্ষই মানুষকে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। তা ছাড়া তাঁরা ভোটারদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, এবার শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হবে। এ কারণে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন।
খুলনা সিটির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাতটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে খালিশপুর সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। এটিই ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে সর্বনিম্ন ভোটের রেকর্ড। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ২ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে মাত্র ২৪৬ জন ভোট দেন। ওই ওয়ার্ডে গড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
খুলনা সিটির বড় ওয়ার্ডগুলোর একটি ২৪ নম্বর ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডের ভোটার ২৯ হাজার ৪৫৫। নির্বাচনে মাত্র ৭ হাজার ৭০৯ জন ভোট দিয়েছেন। গড়ে ভোট পড়েছে ২৬ শতাংশ। ওয়ার্ডভিত্তিক এটাই সর্বনিম্ন ভোট।
ভোট কম পড়ার কারণ জানতে চাইলে ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণত ভোটারদের বাড়ি থেকে কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজটি করেন কাউন্সিলররা। কিন্তু কোনো প্রার্থী না থাকায় কেউ ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যাপারে উৎসাহিত হননি। হয়তো এ কারণেই ওই ওয়ার্ডে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে।