খুলনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন স্কেল বাস্তবায়নের এক দফা দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে ‘খুলনা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে খুলনা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) মূল ফটকের সামনে তাঁরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দশম গ্রেড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের জন্য বেতন স্কেল ১৩তম থেকে ১২তম গ্রেড করার প্রস্তাব দিয়েছে। এটা একটা প্রহসন, আমরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে যোগ্যতার প্রয়োজন হয় স্নাতক সমমান, অথচ বেতন গ্রেড ১৩তম। অন্যদিকে সমযোগ্যতায় মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক, পুলিশের উপপরিদর্শক, পিটিআই–সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা, এমনকি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কম্পিউটার অপারেটর দশম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। এইচএসসি সমমান ডিপ্লোমা পাসে নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সদের বেতন দশম গ্রেডে। কৃষি ডিপ্লোমায় নিয়োগ পাওয়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বেতন পাচ্ছেন দশম গ্রেডে। তাহলে স্নাতক সম্পন্ন করে নিয়োগ পাওয়া প্রাথমিকের শিক্ষকেরা কেন দশম গ্রেড পাবেন না? আমাদের দৈনিক টিফিনের ভাতা সাত টাকার কম, সেখানে অন্যরা পাচ্ছেন দৈনিক ২০০ টাকা। এটা মানা আমাদের জন্য ভীষণ কষ্টের।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের বেতন স্কেল ও বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে থেকে স্বাভাবিক জীবনমান বজায় রাখতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কেবল এই বেতন কাঠামোর জন্য পেশাগত ও আর্থসামাজিক মর্যাদার দিক থেকে হেয়প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের। শ্রেণিকক্ষে পূর্ণ মনোযোগে শিশুদের পড়ানোর পর শ্রেণিকক্ষের বাইরের আর্থসামাজিক বাস্তবতায় বিষণ্নতা আঁকড়ে ধরছে। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করার মাধ্যমে এর কিছুটা সমাধান সম্ভব।
মানববন্ধন থেকে শিক্ষকেরা দ্রুত তাঁদের জন্য দশম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দাবি জানান।
কৈলাশগঞ্জ দোলখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চম্পক কুমার সরদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শিক্ষক গোবিন্দ ঢালী, আদিত্য মণ্ডল, প্রীতম গোলদার, তৌহিদ সুমন, খাদিজা সুলতানা, চৈতালি কর প্রমুখ।