যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় ভাবীকে হত্যার দায়ে দেবরকে মৃত্যুদণ্ড ও তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সুরাইয়া সাহাব আজ রোববার দুপুরে এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তির নাম মো. শাহাবুদ্দিন। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। তিনি পলাতক রয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার দুই আসামি নিহত জিনিয়া ইয়াসমিনের স্বামী জুলফিকার আলী ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাঘারপাড়া উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামে জিনিয়া ইয়াসমিনকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করে তাঁর দেবর মো. শাহাবুদ্দিনসহ কয়েকজন। পরে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরদিন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় মো. শাহাবুদ্দিন ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে আসামি করে মামলা করেন জিনিয়ার বাবা ঝিকরগাছার মোবারকপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম। ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট ওই গৃহবধূর দেবর শাহাবুদ্দিন, শাশুড়ি ফরিদা বেগম ও স্বামী জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন বিচার চলার পর সাক্ষ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে আজ জিনিয়া হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য–প্রমাণের ভিত্তিতে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে খালাস পাওয়া দুজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।’
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি বাদী পক্ষ। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন বাদী শহিদুল ইসলাম। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হত্যার মূলপরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী দুই আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এতে আমরা হতাশ হয়েছি। ন্যায়বিচার পাইনি। আমরা খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’