ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

হাইকোর্টের আদেশে ক্যাম্পাস ছাড়লেন নির্যাতনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগের দুই নেত্রী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সানজিদা চৌধুরী ও তাবাসসুম ইসলাম ক্যাম্পাস ছেড়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদাত হোসেন।

গত রোববার রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেছেন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এই ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রী গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

তাবাসসুম ইসলাম

এ ঘটনায় এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে সানজিদা ও তাবাসসুম যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, তবে তদন্তের প্রয়োজনে কমিটি তাঁদের ডাকতে পারবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের লিখিত আদেশ এখনো হাতে পাননি। তবে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কিছু বিষয় জানার পর উপাচার্য ওই দুই ছাত্রীকে ক্যাম্পাস ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। তিনি বিষয়টি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষকে জানান। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রাধ্যক্ষ নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা হল ও ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছেন।

প্রক্টর বলেন, দুই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এরপর তাঁরা ক্যাম্পাস ছাড়ে। এর মধ্যে একজনের বাড়ি রংপুর, তিনি তাঁর বাবার কর্মস্থল রাজশাহীতে চলে গেছেন। আরেকজন একটু দূরের জেলার এ জন্য তিনি রাতে কুষ্টিয়ায় অবস্থান করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে উপাচার্য কথা বলেছেন জানিয়ে প্রক্টর শাহাদাত বলেন, ‘আমি নিজে ছাত্রীসহ তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেছি। ক্যাম্পাসে তাঁর নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানিয়েছি। ওসি ও আমার ফোন নম্বর দিয়েছি। তাঁর খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।’

সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপর অভিযুক্ত তাবাসসুম ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।