‘সমন্বয়ককে’ হাতুড়িপেটা করার ঘটনা নিয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয়
‘সমন্বয়ককে’ হাতুড়িপেটা করার ঘটনা নিয়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয়

রাজশাহীতে হাতুড়িপেটার ঘটনা সমন্বয়কদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, দাবি ছাত্রদলের

রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘রাজশাহীর সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহী নগর ছাত্রদল এই ঘোষণা দেয়। সে সঙ্গে তারা সোহেল রানাকে হাতুড়িপেটার অভিযোগও অস্বীকার করে বলেছেন, এটা সমন্বয়কদের কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের কালেক্টরেট মাঠ ও মাদ্রাসা মাঠ এলাকায় সোহেল রানার ওপর দুই দফা হামলা হয়। বাঁশ ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয় তাঁকে। পরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সোহেল রানা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের জয়, রুহুল আমিনসহ ২০-২৫ জন নেতা–কর্মী দুদফায় তাঁকে ইচ্ছামতো পিটিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহীতে কোনো সমন্বয়ক পরিষদ গঠিত হয়নি। তবে রাজশাহী কলেজের যেসব শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকেছেন তাদের কেউ কেউ নিজেকে ‘রাজশাহীর সমন্বয়ক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। সোহেল রানা তেমনই একজন। তবে আগে তিনি জাসদ ছাত্রলীগ করতেন। বর্তমানে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত তিনি।

সোহেল রানার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রাজশাহী নগর ছাত্রদল। সেখানে লিখিত বক্তব্যে  নগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী বলেন, ‘এখন কেউ কেউ  ভুয়া সমন্বয়ক সেজে নিজের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা নিজেকে সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করে রাজশাহী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সে নিজেকে সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করলেও স্পষ্টত সে জাসদ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা।’

আকবর আলী বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে নিজেদের মধ্যে দুটি পক্ষ বিরোধে জড়ায়। একপর্যায়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সে ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে সোহেল রানা রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কুৎসা রটনা করেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়। অথচ ছাত্রদলের কোনো নেতা–কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান, ছাত্রদল নেতা সুলতান আহমেদ, আদিউল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ, সদস্যসচিব আহমেদ রায়হান প্রমুখ।

ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওরা নিজেরাই ভুয়া, আন্দোলনের সময় ওরা ছিল না। এখন মনে করছে ওরা ক্ষমতায় চলে গিয়েছে। ওরা ছাত্রলীগের মতো পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হচ্ছে, যার কারণে আমার ওপর হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালিয়েছে।’

সোহেল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এক দোসরকে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেটা আটকিয়েছি। কিন্তু ওই সময় রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলই ওই অধ্যক্ষের পক্ষ নিয়েছিল টাকা খেয়ে। তারা এখন প্রতিনিয়ত ছাত্রদের নির্যাতন করছে। সম্প্রতি আমারই এক ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে ছাত্রলীগ ট্যাগ লাগিয়ে বেইজ্জতি করছিল। আমি গিয়ে রক্ষা করি। আমি যে তাদের বিরুদ্ধে একটা শক্তি, সেটা তারা মানতে পারছে না।’