গাজীপুরে বিএনপির পদযাত্রায় আজ শনিবার পুলিশের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দমন-পীড়নের প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ ১০ দফা দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাজীপুর বিএনপি ওই কর্মসূচি পালন করে।
সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে দুপুর ১২টার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন।
বক্তব্য শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শিববাড়ি-রাজবাড়ি সড়কে পদযাত্রা বের করেন। তবে পদযাত্রাটি দলীয় কার্যালয় থেকে জোড়পুকুর পর্যন্ত যাওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। পরে পুলিশের বাধায় দলীয় কার্যালয় থেকে ৫০ গজ সামনে গিয়ে পদযাত্রাটি শেষ হয়। নেতা-কর্মীরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘১৯৯৫ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল না। তখন আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাতীয় পার্টি মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করে। সে সময় সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে জয়লাভ করে খালেদা জিয়া আড়াই মাস ছিলেন। সেই আড়াই মাসের মধ্যে তিনি জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করেন এবং স্বেচ্ছায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। সংবিধান তো আল কোরআন, বাইবেল বা গীতা নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না। সংবিধান দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। সে কারণেই দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আমাদের এই দশ দফা গণতান্ত্রিক দাবি। তাই এটি আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আদায় করতে চাই। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি, অন্যায় করছি না। আমরা ভোটচোরদের বিপক্ষে কথা বলছি, যারা এ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছি। আপনারা নিজেরাই দেখেছেন, ক্যামেরা চেক করে দেখেন জবাব পেয়ে যাবেন পুলিশ কীভাবে বাধা দিয়েছে।’
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘পুলিশ সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী আচরণ করেছে শেখ হাসিনার নির্দেশে। আমাদের দাবি সম্পূর্ণ জনগণের দাবি, কিন্তু সরকার জনগণের দাবি আদায়ের কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। এখানে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সহসম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সাইয়েদুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানসহ জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির পদযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।’