ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বাৎসরিক বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি, বাৎসরিক অর্জিত ছুটির টাকা প্রতি মাসে পরিশোধসহ নানা দাবিতে কারখানায় উপস্থিত হলেও কাজ করেনি কয়েকটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। পরে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর কারখানা থেকে চলে যান তাঁরা।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর কর্মকর্তারা জানান, আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার নাসা, আল-মুসলিম, নিউএইজ, ট্রাউজার লাইনের শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বসে ছিলেন। পরে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর আজ সোমবার বেলা ১১টার মধ্যে এসব তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা চলে যান।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, আজ আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিকেরা চলে গেছেন, এমন কারখানার সংখ্যা সাতটি। এসব কারখানার মধ্যে রয়েছে নাসা সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড, নাসা বেসিক লিমিটেড, এজে সুপার গার্মেন্টস লিমিটেড, ফিরোজা গার্মেন্টস লিমিটেড, মাম গার্মেন্টস লিমিটেড, আল–মুসলিম অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ট্রাউজার লাইন লিমিটেড।
শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মী ও একাধিক কারখানার শ্রমিকেরা জানান, শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা নানা সময়ে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি, বাৎসরিক অর্জিত ছুটির বকেয়া টাকা প্রতি মাসে পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন। এসব দাবির পাশাপাশি শ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিও করছেন। এসব দাবিতে আজ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা যথাসময়ে কারখানায় উপস্থিত হলেও কাজ না করে কারখানার ভেতরের অংশে বসে কর্মবিরতি পালন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসা বেসিকের এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে গার্মেন্টসে গেছি। নয়টা বাজছে, তখন ছুটি দিয়া দিছে। আজকে (সোমবার) কোনো কাজ হয় নাই। আমরাদের ইনক্রিমেন্ট, বেতন বাড়াইতে হবে।’
বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বাৎসরিক বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন। এ ছাড়া তাঁরা মজুরি বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিও জানিয়েছেন। মূলত শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
খায়রুল মামুন বলেন, ন্যূনতম মজুরি পুনর্মূল্যায়ন ও বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধিসংক্রান্ত বিষয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। দ্রুতই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে শ্রমিকদের অবহিত করতে হবে। নাহলে সংকট আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সকালে নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকেরা কারখানায় উপস্থিত হন। নাসা, আল-মুসলিম, নিউএইজ, ট্রাউজার লাইনের শ্রমিকেরা বাৎসরিক বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির দাবিতে কাজ না করে কারখানার ভেতরে অবস্থান করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করলে শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে চলে যান। মূলত তাঁরা বাৎসরিক বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ও বাৎসরিক ছুটির বকেরা টাকা ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন।