টেকনাফের সমুদ্রসৈকত থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার

মরদেহ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি লাশ সাবরাংয়ের খুরেরমুখ সমুদ্রসৈকত থেকে এবং অপর লাশ দুটি বাহারছড়ার বড় ডেইল সমুদ্রসৈকত থেকে উদ্ধার করা হয়।

সাবরাং সৈকত থেকে উদ্ধার লাশটি মাথাবিহীন অর্ধগলিত। লাশটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাঁর বয়স ৩৫-৪০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। অন্যদিকে বাহারছড়ার সৈকত থেকে উদ্ধার লাশ দুটি সেন্ট মার্টিনে ট্রলারডুবিতে উদ্ধার অভিযানে যাওয়া স্পিডবোট ডুবে নিখোঁজ থাকা দুই ব্যক্তির। এই দুজনের নাম মোহাম্মদ ফাহাদ (৩০) ও মোহাম্মদ ইসমাঈল (৩০)। ফাহাদ সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, তিনি সেন্ট মার্টিন দক্ষিণ পাড়ার আব্দুর রহমানের ছেলে। ইসমাঈল পশ্চিম কোনারপাড়ার মৃত আজম আলীর ছেলে।

গত বুধবার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার সময় একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে নুর মোহাম্মদ সৈকত নিখোঁজ হন। ওই ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার করতে যাওয়া একটি স্পিডবোট ডুবে মোহাম্মদ ফাহাদ, ইসমাঈলসহ তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। ট্রলারডুবির পর উদ্ধার অভিযানে গড়িমসির অভিযোগ তুলে সেন্ট মার্টিনে কোস্টগার্ডের একটি চৌকিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে কোস্টগার্ড। এ সময় হামিদ হোসেন নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এ নিয়ে বুধবার প্রথম আলোর অনলাইনের ‘সেন্ট মার্টিন ট্রলারডুবির ঘটনা ঘিরে চৌকিতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, কোস্টগার্ডের ফাঁকা গুলি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

গত বুধবার বিকেলে এস বি সাদ্দাম নামের একটি মাছ ধরার ট্রলারে ৬ জন মাঝিমাল্লা ও ১২ জন যাত্রীসহ শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিনে ফিরছিল। গোলগরা এলাকায় প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের খুরেরমুখ সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে মাথাবিহীন অর্ধগলিত একটি লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে বাহারছড়ার বড় ডেইল সমুদ্রসৈকত এলাকা থেকে ফাহাদ ও ইসমাঈলের লাশ দুটি উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। প্রথম আলোকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ নৌ পুলিশের পরিদর্শক তপন কুমার বিশ্বাস ও সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

নৌ পুলিশের পরিদর্শক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, মিয়ানমারের মংডু শহরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সে দেশের সরকারি বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। মাথাবিহীন অর্ধগলিত লাশটি সেখান থেকে ভেসে আসতে পারে। এর আগেও নাফ নদী ও সাগর তীরবতী এলাকা থেকে আরও কয়েকটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। আজকের উদ্ধার করা লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

অপর দুই লাশের ব্যাপারে সেন্ট মার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, গত বুধবার বিকেলে এস বি সাদ্দাম নামের একটি মাছ ধরার ট্রলারে ৬ জন মাঝিমাল্লা ও ১২ জন যাত্রীসহ শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্ট মার্টিনে ফিরছিল। গোলগরা এলাকায় প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। সেন্ট মার্টিনের কিছু বাসিন্দা তিনটি ট্রলার ও একটি স্পিডবোট নিয়ে যাত্রী ও মাঝিমাল্লাদের উদ্ধার করেন। তবে ট্রলারডুবিতে ৬ জন মাঝিমাল্লা, ১ জন নারীসহ ১১ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও ওই ঘটনায় নুর মোহাম্মদ সৈকত নামে এক যাত্রী নিখোঁজ ছিলেন। দুই দিন হলো তাঁর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ট্রলারডুবির ঘটনায় সেন্ট মার্টিন থেকে স্পিডবোটে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে যান কয়েকজন। এ সময় ঢেউয়ের কবলে পড়ে তাঁদের স্পিডবোটটি উল্টে যায়। ওই দিন রাতে সাঁতরে চারজন শাহপরীর দ্বীপ এলাকা দিয়ে তীরে উঠে এলেও স্পিডবোট ডুবে ফাহাদ ও ইসমাঈল নিখোঁজ ছিলেন।