যমজ দুই বোন মারজান ইসলাম ও মারজিয়া ইসলাম
যমজ দুই বোন মারজান ইসলাম ও মারজিয়া ইসলাম

এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন যমজ দুই বোন

একসঙ্গে জন্ম ও একসঙ্গে বেড়ে ওঠা। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সব ক্ষেত্রে দুজনের পরীক্ষার ফলাফলও একই। মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় যমজ দুই বোন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এই দুই বোনের নাম মারজান ইসলাম ও মারজিয়া ইসলাম।

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মুরাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মৃধা ও সাজেদা বেগম দম্পতির মেয়ে তাঁরা। দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে মারজান ও মারজিয়া সবার ছোট। যমজ কন্যাদ্বয়ের এমন সাফল্যে পরিবারের সদস্যসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই খুশি।

’অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি।

কৃষক পরিবারের যমজ এই দুই বোন এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর কলেজে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়ায় প্রথম আলো ট্রাস্ট। দুই বোনকে দেওয়া হয় ‘ব্র্যাক ব্যাংক-প্রথম আলো ট্রাস্ট অপরাজেয় তারা’ শিক্ষাবৃত্তি। এই শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় এবার মারজান ও মারজিয়া দুমকির সালামপুর আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

বর্তমানে মারজান ও মারজিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করার জন্য ঢাকায় অবস্থান করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে আলাপকালে মারজান প্রথম আলোকে বলেন, ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে তাঁরা সরকারি চাকরিজীবী হতে চান। সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করছেন।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মারজান ইসলাম ও মারজিয়া ইসলাম বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে প্রতিদিন দুমকির সালামপুর আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসায় হেঁটে যাতায়াত করতেন। পড়ালেখায় দুই বোন বেশ মনোযোগী ছিলেন। নিয়ম করে তাঁরা পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষকদের প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার পাশাপাশি লিখে রেখেছেন। দুই বোনের এ সাফল্যের পেছনে শিক্ষকদের অবদান আছে। ভবিষ্যতে দুই বোন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে সাধারণ মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চান।

মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ অলিউর রহমান বলেন, যমজ দুই বোন মারজান ও মারজিয়াকে লেখাপড়ায় যতটুকু পেরেছেন, তাঁরা সহযোগিতা করেছেন। তাঁরা লেখাপড়া শেষ করে ভবিষ্যতে দেশের কল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করতে পারবেন।

দুই মেয়ের সাফল্যে মা সাজেদা বেগম বলেন, এখন মেয়েদের স্বপ্ন পূরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। বাবা বাবুল মৃধা বলেন, তিনি কৃষক। পৈতৃক সূত্রে দুই একরের মতো জমি পেয়েছেন। চাষাবাদ করে যা পান, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। তার ওপর সন্তানদের লেখাপড়া। নিজে যতটুকু পেরেছেন, সন্তানদের লেখাপড়ায় সহায়তা করেছেন। এসএসসিতে দুই মেয়ে একসঙ্গে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর ব্র্যাক ব্যাংক ও প্রথম আলো ট্রাস্ট তাঁদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে এবং দুজনকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়। যা তাঁদের উপকারে এসেছে।