পিরোজপুরে এহসান গ্রুপের উপদেষ্টা আব্দুর রব খানকে (৭০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার রাতে নিজ গ্রাম পিরোজপুর পৌরসভার ছোট খালিসাখালী থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আব্দুর রব খান এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসানের বাবা। তিনি খালিসাখালী আশ্রাফুল উলুম কওমি মাদ্রাসার পরিচালক পদে রয়েছেন।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ জ ম মাসুদুজ্জামান বলেন, গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আব্দুর রব খানের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। আজ রাত নয়টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০০৮ সালে পিরোজপুরে এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স প্রতিষ্ঠা করেন রাগীব আহসান। পরে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নাম দেওয়া হয় এহসান গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড, ড্যাফোডিল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান বেসিক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড ও এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড নামের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে অধিক মুনাফা দেওয়ার কথা বলে সঞ্চয় আমানত নিয়ে ব্যবসা শুরু করে।
গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এহসান গ্রুপের উপদেষ্টা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে পিরোজপুরে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে।
পিরোজপুর ও আশপাশের এলাকায় এহসান গ্রুপ মূলত সুদবিহীন বিনিয়োগের প্রচার চালিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করত। ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রচার চালাত। এসব পুঁজি করে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের শতকোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের মাসিক লভ্যাংশ ও আমানতের টাকা ফেরত দেওয়া বন্ধ করে দেয়। প্রতারণা ও জালিয়াতি করে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোড এলাকা থেকে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান ও তাঁর ভাই আবুল বাশার খানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই দিনই পিরোজপুর থানা-পুলিশ রাগীব আহসানের অপর দুই ভাই মাহমুদুল হাসান ও খাইরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
ওই দিন পিরোজপুর সদর উপজেলার মূলগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে রাগীব ও তাঁর চার ভাইকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় ৯৭ জন গ্রাহকের ৯১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার চারজন এখন কারাগারে। অপর আসামি রাগীবের আরেক ভাই শামীম হাসানকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় রাগীব আহসানসহ এহসান গ্রুপের উপদেষ্টা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে পিরোজপুরে এ পর্যন্ত ১৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার বাদী সবাই আমানতকারী ও প্রতিষ্ঠানটির কর্মী।