ভৈরবে চাকা পিছলে সেতুতে উঠতে পারেনি ট্রেন, নির্জন স্থানে ছিনতাইয়ের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র
কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চট্টগ্রামগামী আন্তনগর ট্রেন মহানগর এক্সপ্রেস চাকা পিছলে রেলওয়ে সেতুতে উঠতে পারেনি। এতে ট্রেনটি সেতুর ভৈরব প্রান্তে অন্তত ২৫ মিনিট আটকে ছিল। বারবার চেষ্টা করেও সেতুতে উঠতে না পেরে একপর্যায়ে ট্রেনটিকে ভৈরব স্টেশনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে রেলওয়ে সেতুর ভৈরব প্রান্তে এ ঘটনা ঘটে।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ধারণা, ট্রেনটি অতিরিক্ত যাত্রী এবং প্রচুর বৃষ্টির কারণে উঁচুতে উঠতে গিয়ে ‘হুইল স্লিপ’–এর শিকার হয়। নির্জন স্থানে প্রায় আধা ঘণ্টা থেমে থাকার কারণে ট্রেনের অনেক যাত্রী ছিনতাইয়ের শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রতিদিন এক জোড়া আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করে। গতকাল ট্রেনে আসনসংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি যাত্রী ছিল। স্বাভাবিকভাবে মহানগর গোধূলি ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয় রাত ১১টায়। তবে গতকাল ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে আসে ১১টা ৩২ মিনিটে। ছেড়ে যায় ১১টা ৩৫ মিনিটে। কয়েক মিনিট পরেই ট্রেনটি ভৈরব সেতুতে উঠতে গিয়ে হুইল স্লিপের শিকার হয়। পরে রা ১২টা ৮ মিনিটে ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে ফিরে আসে। স্টেশনে ফিরিয়ে এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের কামরা থেকে নামানো হয়। তাঁদের আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেসে করে গন্তব্যে পাঠিয়ে মহানগর এক্সপ্রেসের ভর কমানো হয়। পরে ১২টা ৪৫ মিনিটে মহানগর এক্সপ্রেস সেতু অতিক্রম করে গন্তব্যে যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ছিনতাইয়ের কথা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় লোকজন জানান, সেতুর কারণে ভৈরব স্টেশন থেকে রেললাইন ওপরের দিকে উঠতে থাকে। সেতুর ভৈরব প্রান্ত সড়ক থেকে অনেকটা উঁচুতে। এ অবস্থায় গভীর রাতে ট্রেনটি থেমে থাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সাধারণত স্থানটিতে সব সময় ছিনতাইকারীদের আনাগোনা থাকে। ফলে হাতের কাছে ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী পেয়ে ছিনতাইকারীরা নানা কৌশলে যাত্রীদের ব্যাগ ও মুঠোফোন কেড়ে নেয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সমস্যার কথা জানিয়ে পোস্টও দিয়েছেন।

ভৈরব রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মহানগর ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামরা যাত্রীতে ঠাসা ছিল। সেতু অতিক্রমের সময় ভৈরবে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি হলে লাইন পিচ্ছিল থাকে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত লোডে থাকা ট্রেনটিকে নিয়ে ওপরের দিকে উঠতে গিয়ে ইঞ্জিনের হুইল স্লিপ হয়।

ট্রেন থামা অবস্থায় যাত্রীদের ছিনতাইয়ের অভিযোগ স্বীকার করতে রাজি হননি ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম সিকদার। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেননি।’