ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কলেজের কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ, থানায় মামলা

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ
ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কলেজের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখসহ তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন।

মারধরের শিকার ওই কর্মচারীর নাম মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি ওই কলেজের হিসাবরক্ষক। মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি হলেন ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামীম আহম্মেদ ও সহসভাপতি নাদিম হাসান। এ ঘটনায় ওই দুই নেতাকে জেলা ছাত্রলীগ আজ সকালে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে শামীম আহম্মেদ ও নাদিম হাসানের নেতৃত্বে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী কলেজের সাধারণ শাখায় কম্পিউটার কক্ষে আসেন। শামীম আহম্মেদ অন্য কলেজ থেকে স্থানান্তরের (মাইগ্রেশন) মাধ্যমে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে এই কলেজে ভর্তি নিতে বলেন। তখন মো. হেলাল উদ্দিন অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া কারও নাম ভর্তির তালিকায় তুলতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ওই ছাত্রলীগ নেতা তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। নিষেধ করা হলে তাঁরা সদলবল হেলাল উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা টেনেহিঁচড়ে হেলাল উদ্দিনকে ওই কক্ষ থেকে বের করে একটি অটোরিকশায় উঠিয়ে নেন। অটোরিকশায় তাঁকে মারধর করতে করতে শহরের পৌর কবরস্থানে নেন। হেলাল উদ্দিনের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে ওই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাঁকে রেখে পালিয়ে যান। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় হেলাল উদ্দিনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে আসার পর শৃঙ্খলাপরিপন্থী ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার অপরাধে শামীম ও নাদিমকে কলেজ শাখা থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা সাত দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

জামালপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বলেন, ওই কলেজের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখানে দুজনের নামসহ তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।