পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পিতবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলাে

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাংলা ব্লকেডের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটায় আন্দোলনে নামেন তাঁরা।

এর আগে বেলা তিনটা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় জড়ো হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যাতে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে না পারেন, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দুটি ছাত্র হল থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে আন্দোলনস্থলে যোগ দেন। তাঁদের হাতে কোটা সংস্কার দাবির নানা স্লোগান লেখা প্লাকার্ড ও ব্যানার দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হলে মূল ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়। তালা খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের মহাসড়কে অবস্থান নেন। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে বিক্ষোভ শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের তালা খুলে দেওয়া হয়। তালা খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের মহাসড়কে অবস্থান নেন

এতে বরিশালের সঙ্গে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা ছাড়াও দক্ষিণের জেলা বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী ও ঝালকাঠীর একাংশের সড়ক যোগযোগ বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের দুই প্রান্তে অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যান আটকা পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ জনগণ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঁইয়া বলেন, ‘মহাসড়ক অবরোধ করলে দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ জেলার হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হন। আমরা জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বোঝাতে চেষ্টা করেছিলাম, যাতে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ না করেন।’

সড়কে আগুন জ্বালিয়ে সেখানে বিক্ষোভ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালন করে মিছিল করে অববোধ শেষ করার কথা জানান তাঁরা

অবরোধ চলাকালে মহাসড়কে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না। এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি, প্রলোভন, চাপ, ভয়ভীতি কিংবা বাধাদানের সুযোগ নেই। সারা দেশের শিক্ষার্থীরা আজ এই দাবির পক্ষে ঐক্যবদ্ধ।

এ সময় বৈষম্যমূলক কোটাবিরোধী আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য সুজয় শুভ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে শত বাধা উপেক্ষা করে হলেও আমরা মাঠে থাকব। যত দিন পর্যন্ত সরকার আমাদের দাবি মেনে না নেবে, তত দিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমরা আমাদের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য আন্দোলন করছি। এটা কারও বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়। এটা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন সফল করতে চাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছুর বিনিময়ে আমাদের রাজপথ থেকে সরানো যাবে না।’

শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টায় তাঁরা দাবির সমর্থনে মোমবাতি প্রজ্বালন করবেন। এরপর মিছিল করে অববোধ শেষ করবেন।