বিভিন্ন ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা সেজে মুঠোফোনে কল করতেন তিনি। এরপর বলতেন, ‘আপনাদের নামে সরকারি টাকা ও গরু বরাদ্দ এসেছে। সমাজসেবা কর্মকর্তা খোঁজখবর নিতে আপনাদের কাছে যাবেন।’ এরপর নিজেই দু-এক দিন পর সমাজসেবা কর্মকর্তা সেজে ওই ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেন, এনএসআই থেকে ফোন এসেছিল কি না। তাঁদের নামে গরু ও নগদ টাকা অনুদান আসার কথা আবারও বলতেন। অনুদানের কথা শুনে ওই ব্যক্তিরা যখন খুশি হতেন, তখন কাগজপত্র তৈরির কথা বলে টাকা আদায় শুরু করতেন। এভাবে অব্যাহত প্রতারণার এক পর্যায়ে ধরা পড়েন তিনি।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রুবেল হোসেন (৩০)। তাঁর বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা দক্ষিণ দিওর গ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে এমন প্রতারণার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেছেন একই উপজেলার শাকিল আহমেদ (২৪) নামের এক কৃষক। মামলায় তাঁকে গতকাল শনিবার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় লোকজন ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রুবেল হোসেন অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহের পর কল করে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গরু ও টাকা অনুদানের কথা জানাতেন। এরপর সমাজসেবা কর্মকর্তা পরিচয়ে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ ও একটি ফরম পূরণ করাতেন। মামলার বাদী শাকিল আহমেদের ক্ষেত্রেও তা–ই করেছেন। ফরম পূরণের আগে কাগজপত্র ঠিক করানোর কথা বলে ছয় হাজার টাকা নেন। পরে আরেক দফা ১৫ হাজার টাকা দাবি করলে শাকিলের সন্দেহ হয়। তখন জিজ্ঞাসাবাদ করলে রুবেল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। এভাবে ১৫ থেকে ২০ জনের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জয়পুরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রুবেল হোসেন কাজীপাড়া গ্রামে এমন প্রতারণা করতে গিয়ে লোকজনের হাতে আটক হন। আমরা সেখান থেকে তাঁকে থানায় নিয়ে এসেছি।’
জয়পুরহাট সদর থানার ওসি শাহেদ আল-মামুন বলেন, রুবেল হোসেন এনএসআই ও সমাজসেবা কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা করতেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শাকিল আহমেদ বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আজ রুবেল হোসেনকে ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।