সিলেটে হঠাৎ কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আকাশ থেকে পড়া বড় বড় শিলাখণ্ডের আঘাতে নগরের অনেক বাসাবাড়ির জানালার কাচ ভেঙে গেছে। যানবাহনেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজ রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে এই ঝড় হয়।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, বছরের এই সময়ে ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিকে কালবৈশাখী বলা হয়ে থাকে। কালবৈশাখীতে শিলাবৃষ্টি হয়।
সিলেট নগরের জেল রোড এলাকায় চা–বিক্রেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, তাঁর বয়স ৬৪ বছর। তিনি তাঁর এ বয়সের মধ্যে এত বড় শিলা দেখেননি। শিলাবৃষ্টির কারণে তাঁর দোকানের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিলেট নগরের মেজরটিলা এলাকার বাসিন্দা ইমরান রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি প্রাইভেট কার নিয়ে বের হয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরের নয়াসড়ক এলাকায় গাড়ি রাস্তার পাশে রেখে কেনাকাটা করতে একটি দোকানে গিয়েছিলেন। দোকন থেকে বের হয়ে তিনি তাঁর প্রাইভেট কারের সামনের এবং পেছনের কাচ ভাঙা অবস্থায় পেয়েছেন।
বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক নাবিল হোসেন সিলেট নগরের নয়াসড়ক এলাকার বাসিন্দা। বৃষ্টির আগে তিনি তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল বারান্দায় রেখেছিলেন। বৃষ্টির পর তিনি তাঁর মোটরসাইকেলের ট্যাংক চ্যাপ্টা এবং আয়না ভাঙা অবস্থায় পেয়েছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চৈত্রের শেষ ও বৈশাখের শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিমা মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে কালবৈশাখী হয়। এ সময় বৃষ্টির ফোঁটাগুলো পড়ার সময় প্রায়ই মাঝপথে বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপের মধ্যে পড়ে। ফলে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো নিচে নামতে নামতে তার কিছু অংশ আবার ওপরে উঠতে শুরু করে এবং আরও ঠান্ডা হতে থাকে। ঘনীভূত পানির ফোঁটাগুলো আরও ভারী হয়ে আবার নিচে নামতে থাকে এবং আবার গরম বাতাসের ঊর্ধ্বমুখী চাপে পড়ে তার কিছু অংশ আবার ওপরে উঠতে থাকে। কয়েকবার ওঠানামা করতে করতে পানির ফোঁটাগুলোর কিছু অংশ ছোট ছোট বরফখণ্ডে পরিণত হয়। এগুলো বেশি ভারী বলে আর ওপরে উঠতে পারে না। বৃষ্টির ধারার সঙ্গে নিচে নেমে আসে। এটাই শিলাবৃষ্টি। শিলাবৃষ্টির প্রধান শর্ত প্রচণ্ড গরম। চৈত্র–বৈশাখ মাসে এ রকম গরম পড়ে। ফলে কালবৈশাখীর সময় শিলাবৃষ্টি হয়।