কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তাঁর মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহ্সীন বাহারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে মামলাটি করেন নগরীর দক্ষিণ চর্থা (তালতলা) এলাকার কাশেম মিয়ার ছেলে ছোটন মিয়া।
মামলায় ২২৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নগরীর দক্ষিণ চর্থা (তালতলা) এলাকা থেকে মামলার বাদীসহ অর্ধশতাধিক ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড় আসছিলেন। এ সময় মামলার প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্য বাহার ও তাঁর মেয়ে তাহ্সীন বাহারের নির্দেশে অস্ত্র নিয়ে মামলার অন্য আসামিরা হামলা ও গুলি চালান। এ সময় গুলি করে, পিটিয়ে ও কুপিয়ে অনেককে আহত করা হয়।
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহাম্মেদ নিয়াজ, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম, সিটি কাউন্সিলর হাবিবুল আল আমিন, সরকার মাহমুদ জাবেদ, আবদুস ছাত্তার, সৈয়দ রায়হান আহাম্মদ, আবুল হাসান, কাউছারা বেগম, সাবেক কাউন্সিলর শাহ আলম খান, পাঁচথুবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান রাজু, আমড়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ মোট ৩৭৫ জন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলায় যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, সরকার পতনের পর তাঁদের অনেকেই এখন এলাকায় নেই। তাঁদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এর আগে গত রোববার রাতে সাবেক সংসদ সদস্য বাহার ও তাঁর মেয়ে তাহ্সীন বাহারসহ আওয়ামী লীগের ৬২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মাছুম মিয়া নামের এক হোটেল কর্মচারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়। এ নিয়ে কুমিল্লায় বাহার ও তাঁর মেয়েসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।