ফেনীর সোনাগাজীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে আহত এক যুবদল নেতার দায়ের করা মামলায় আসামি হয়েছেন যুবদলের আরেক কর্মী। গত ৪ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহীপাল উড়ালসেতু এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের যুবদল নেতা আফসার হোসেন আহত হন। সরকার পরিবর্তনের পর ওই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ফেনী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় মতিগঞ্জ ইউনিয়নের যুবদলের কর্মী সাইফুল ইসলামকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় গত রোববার রাতে উপজেলার মতিগঞ্জ বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার দৌলতকান্দি গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে যুবদলের কর্মী সাইফুল ইসলাম। সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিএনপির রাজনীতি করার কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্নভাবে মামলা-হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছি। সরকার পতনের পরও বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতিপক্ষের আক্রোশের শিকার হলাম। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিহিংসামূলকভাবে এ মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। এই মামলার বাদীর সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। বাদীর সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি। পরিচিত না হলেও আমার এলাকার প্রতিপক্ষ বাদীকে ভুল বুঝিয়ে আমাকে এ মামলায় আসামি করেছে। এ বিষয়ে আমি জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতাদের জানিয়েছি।’
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খুরশিদ আলম ভূঞা বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় চলমান মামলাগুলোতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন আসামি না হয়, আমরা সেই দাবি জানাই। সাইফুলের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।’
উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিন উদ্দিন দোলন বলেন, পারিবারিক ঝামেলাকে কেন্দ্র করে হয়রানির উদ্দেশ্যে সাইফুলকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। দলীয় নেতারা, মামলার বাদী ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সাইফুলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মামলার বাদী আফসার হোসেন বলেন, তাঁর মামলার আসামি সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে যুবদলের কর্মী পরিচয় দিলেও তিনি গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একই সঙ্গে ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে থেকে মহীপাল এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় অংশ নেন। যার প্রমাণ আছে। তিনি বুঝেশুনে মামলায় ১৮৫ জনকে আসামি করেছেন।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, নিরপরাধ কাউকে মামলায় আসামি করা হলে তাঁদের কোনো রকম হয়রানি করা হবে না। পরবর্তী সময়ে মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের বাদ দেওয়া হবে।